দেশের অন্যতম স্থলবন্দর বেনাপোলে শিগগিরই চালু হচ্ছে কার্গো ভেহিক্যাল টার্মিনাল। ফলে একদিকে যেমন বেনাপোল বন্দরের সক্ষমতা বাড়বে, অন্যদিকে সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়বে। ইতিমধ্যে বেনাপোল বন্দরে পণ্যজট কমাতে কার্গো ভেহিক্যাল টার্মিনালের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। ৩২৯ কোটি টাকায় নির্মিত টার্মিনালটি নভেম্বর মাসে চালু হবে। আর টার্মিনালটি চালু হলে একসঙ্গে ১২০০ থেকে ১৫০০ পণ্যবাবোঝাই ট্রাক রাখা যাবে। তখন পণ্যজট কমে বাড়বে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য। বেনাপোল বন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারত থেকে প্রায় সাত থেকে আট হাজার মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়। ফলে বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে পণ্যজট ও যানজটে ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি পোহা হতো। টার্মিনালটি চালু হলে বন্দরে বাণিজ্যে গতিশীলতা বাড়বে। বন্দরে আসা ট্রাকের মালামাল দ্রুত লোড-আনলোড সম্ভব হবে। ফলে একদিকে পণ্যজট ও যানজট কমবে, সেইসঙ্গে রাজস্ব আয়ও বাড়বে। সূত্র জানায়, বেনাপোল স্থলবন্দরে ২৪ একর জমির ওপর কার্গো টার্মিনালটি নির্মাণ করা হয়েছে। এর জমি অধিগ্রহণ বাবদ ১০৯ কোটি ও নির্মাণকাজ বাবদ ২২০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এখানে প্রায় দেড় হাজার পণ্যবাহী ট্রাক রাখার ধারণক্ষমতা রয়েছে। নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে চালু হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় পার্কিং ইয়ার্ড, কার্গো ভবন, বন্দর সেবা ভবন, ইউটিলিটি ভবন, ফায়ার স্টেশন, আধুনিক শৌচাগার কমপ্লেক্স, ওয়েব্রিজ স্কেল, চিকিৎসা, রান্না ও বিশ্রামের ব্যবস্থাসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মিত হয়েছে। টার্মিনালটি সাজানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দন লাইট, আসবাবপত্র ও বিভিন্ন রকমের ফুলের গাছ দিয়ে। জমি অধিগ্রহণপূর্বক প্রকল্পটির নির্মাণকাজ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হয়। এদিকে কার্গো টার্মিনাল চালু হওয়া প্রসঙ্গে বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামছুর রহমান জানান, টার্মিনাল চালু হলে দীর্ঘদিনের যানজট ও পণ্যজট কমে যাবে। প্রায় ১৫শ ট্রাক একসঙ্গে রাখতে পারায় পণ্য দ্রুত খালাস সম্ভব হবে। ফলে তাড়াতাড়ি ভারতীয় ট্রাক পণ্য নামিয়ে চলে যেতে পারবে। পণ্য ছাড় করতে দেরি হলে আমদানিকারকদের যে ক্ষতিপূরণ দিতে হতো, সেটি আর লাগবে না। আর যত বেশি পণ্যবাহী ট্রাক আনলোড হবে, সরকার ততবেশি রাজস্ব পাবে। অন্যদিকে এ বিষয়ে বন্দরের উপপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মশিউর রহমান জানান, ইতিমধ্যে টার্মিনালের সব কাজ শেষ হয়েছে। আশা করা যায় নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে টার্মিনালটি উদ্বোধন হবে। চালু হলে বন্দরের সক্ষমতা ও রাজস্ব আয় বাড়বে। কার্গো ভেহিক্যাল টার্মিনাল নির্মাণে বুয়েট, কুয়েট এবং নিজস্ব ল্যাব টেস্টের মাধ্যমে সর্বোচ্চ গুণগত মান নিশ্চিত করা হয়েছে।