বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) বিদ্যুৎ উৎপাদনে ডিজেলের ব্যবহার বাড়াচ্ছে। মূলত দেশে গ্যাস সঙ্কটের কারণে এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। ক্রমাগতই বাড়ছে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ও উৎপাদন ক্ষমতা। তবে গ্যাস স্বল্পতার কারণে গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রগুলোর সক্ষমতার অর্ধেকও ব্যবহার করা যাচ্ছে না। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ¦ালানি হিসেবে ডিজেলের ব্যবহার বাড়ার ফলে চলতি অর্থ বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ভর্তুকিও বেড়ে সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকায় গিয়ে দাঁড়াবে। বিদ্যুৎ বিভাগ এবং পিডিবি সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে পানি বিদ্যুতে সবচেয়ে কম খরচ হয়। তার পরে বেশি খরচসাপেক্ষ জ¦ালানিগুলো যথাক্রমে-কয়লা, গ্যাস, ডিজেল ও ফার্নেস তেল এবং নবায়নযোগ্য জ¦ালানি। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতের জন্য সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা বাজেট সহায়তা (ভর্তুকি) বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। মূলত বিদ্যুতের উৎপাদন মূল্যহার থেকে খুচরা মূল্যহার কম হওয়ার কারণেই ওই ভর্তুকি দেয়া হয়। বর্তমানে পিডিবির দৈনিক ১৩ হাজার ৭৯২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের এক সভায় জানানো হয়, ডিজেল থেকে দৈনিক অন্তত ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ৬ ঘণ্টা উৎপাদন করা প্রয়োজন। সেজন্য প্রতিদিন বিদ্যুতের পিক আওয়ারে (চাহিদা বেশি থাকার সময়) সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ওই স্টেশনগুলো বন্ধ থাকবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। দেশে বর্তমানে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর চাহিদা পূরণে দৈনিক ২ হাজার ২৫২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ দরকার। জ¦ালানি ভেদে কেন্দ্রগুলো রেশনিং করে চালালেও তা ১ হাজার ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুটে দাঁড়ায়। কিন্তু তার বিপরীতে সরবরাহ করা হয় ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।
এ প্রসঙ্গে পিডিবির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন জানান, বিদ্যুৎ উৎপাদনে বর্তমানে দৈনিক ১৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস প্রয়োজন। এর বিপরীতে পেট্রোবাংলা সরবরাহ করছে ১২৫-১৩৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস। এখন গ্যাসের ঘাটতি ডিজেলে পূরণ করতে হবে। তাতে খরচ বেড়ে যাবে। সেজন্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকার যে বরাদ্দ রেখেছে তা বাড়িয়ে সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা প্রয়োজন। ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগের মাধ্যমে জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগকে ডিজেলের সরবরাহ বাড়ানোর চিঠি দেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রায়াত্ত সংস্থা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।