নওগাঁর পত্নীতলায় রবিবার রাতে পদ্মপুকুর বালকাপাড়া গ্রাম থেকে সুমন হোসেন (২৪) নামে এক ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে গ্রামবাসী। লাশ উদ্ধার করে তাঁরা রাত আনুমানিক ১১টায় পত্নীতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে সুমন মারা যায়। পরে থানা পুলিশ খবর পেয়ে লাশ থানায় নিয়ে যায়। নিহত সমুন মহাদেবপুর উপজেলার বিলছাড়া চকপাড়া গ্রামের মৃত ময়েন উদ্দীন এর পুত্র ও নজিপুর বাসষ্ট্যান্ড মসজিদ মার্কেটের সুমন ফটোষ্ট্যাটের পরিচালক। মৃত্যুর পূর্বে নিহত সুমন ফেসবুক লাইভে স্থানীয় এক দাদন ব্যবসায়ীর মাধ্যমে তাঁর জীবণ নাশের হুমকির আশংকা তুলে ধরেন। তাঁর এই ফেসবুক লাইভ ষ্ট্যাটাস এলাকায় বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। সুমনের মৃত্যু হত্যা না আত্নহত্যা তা নিয়েই চলছে এলাকায় জল্পনা-কল্পনা। সরেজমিনে অনুসন্ধান ও মৃত্যুর পূর্বে সুমনের ভাইরাল হওয়া ৫ মিনিট ২২ সেকেন্ডের ফেইসবুক লাইফ ভিডিও থেকে জানা গেছে, তিনি স্থানীয় দাদন ব্যবসায়ী ও একই মার্কেটের ব্যবসায়ী বুলবুল এর নিকট থেকে সুদের উপর কিছূদিন আগে ৭০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। এই ঋণ গ্রহণের সময় দাদন ব্যবসায়ী বুলবুল সাদা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর গ্রহণ করেন এবং ফাঁকা চেক গ্রহণ করেন। ঋণ গ্রহণের পর সুমন পর্যায়ক্রমে বুলবুলকে ১লাখ ৪০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু সুদখোর বুলবুল সুমনের নিকট থেকে আরো ৮লাখ ৫০হাজার টাকা দাবী করেন এবং এই টাকা আদায়ের জন্য নানামুখী চাপ দিতে থাকেন। বাধ্য হয়ে সুমন দাদন ব্যবসায়ীর দাবীকৃত টাকা পরিশোধ করার জন্য সোমবার পর্যন্ত সময় চান এবং টাকা নেওয়ার জন্য যান। সুমনের ফেইসবুক ষ্ট্যাটাস এর ভাষ্য অনুযায়ী তাঁর এই টাকা নিতে যাওয়ার খবর দাদন ব্যবসায়ী বুলবুল ছাড়া কেউ জানতো না। সুমনের ফেইসবুক ষ্ট্যাটাস অনুযায়ী সে বাড়ি ফেরার পথে দুস্কৃতকারীরা তাঁকে ধাওয়া করে এবং সে পালিয়ে ফেইসবুক লাইভে এসে তাঁকে উদ্ধার করার আকুতি জানায়। এলাকাবাসীরা জানান, সুমনের ফেইসবুক ষ্ট্যাটাস দেখে নিজ গ্রাম বিলছাড়া থেকে রুহুল আমিন, নাইম ও রকি ঘটনাস্থলে ছুটে এসে নাদোড়-বিলছাড়া রাস্তার পাশের গাছের ডালের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় সুমনে দেখতে পায়। তাঁরা সুমনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার সময় পথেই তার মৃত্যু হয়। পরে থানা পুলিশ খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে। এ বিষয়ে পত্নীতলা থানা অফিসার ইনচার্জ শাহ মো. এনায়েতুর রহমান জানান, নিহত সুমনের লাশ সুরতহাল রিপোর্ট করার জন্য সোমবার সকালে নওগাঁ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ বিষয়ে জানা যাবে। মৃত্যুর আগে সুমনের ভাইরাল হওয়া ভিডিও আমাদের নজরে এসেছে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। সুমনের মৃত্যুর বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।