উন্নত চিকিৎসার জন্য দীর্ঘদিন থেকে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষকে ছুটতে হয়েছে রাজধানী ঢাকায় কিংবা বিদেশে। দীর্ঘদিনের সেই দুর্ভোগ লাঘবে ও উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে বরিশালে শীঘ্রই চালু হতে যাচ্ছে ৪৬০ শয্যার দীর্ঘ ১৭তলা বিশিষ্ট ‘ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগ চিকিৎসা কেন্দ্র। এই চিকিৎসা কেন্দ্র চালু হলে বরিশালেই উন্নত সেবা পাবে দক্ষিণাঞ্চলবাসী।
শনিবার দুপুরে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের চিকিৎসার জন্য একমাত্র ভরসাস্থল বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানে নেই কোনো ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগের চিকিৎসা ব্যবস্থা। ফলে এসব রোগীদের ছুটতে হতো রাজধানী ঢাকা কিংবা বিদেশে। তাছাড়া এ চিকিৎসা অনেকটা ব্যয়বহুল হওয়ায় অনেকেই বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন। পরবর্তীতে এ অঞ্চলের মানুষের চিকিৎসাখাতে স্বস্তি ফেরাতে নতুন ৪৬০ শয্যার ক্যান্সার, কিডনী ও হৃদরোগ চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০২১ সালের আগস্ট মাসে কাজ শুরু করে গণপূর্ত বিভাগ।
শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ঠিক সামনেই প্রায় তিন একর জমিতে কাজ শুরু হয় ক্যান্সার, কিডনী ও হৃদরোগ চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপনের। প্রথমে ওই প্রকল্পের ব্যয় ১৭৫ কোটি টাকা ধরা হলেও পরে তা বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় ২৩৯ কোটি টাকায়। যার নির্মাণ কাজ চলতি বছরের শেষের দিকে হওয়ার কথা থাকলেও অর্থ বরাদ্দ সংকট ও দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তা করতে পারেনি।
তবে আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করার কথা জানিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জয়েন্ট ভেঞ্চার খান বিল্ডার্সের স্বত্বাধিকারী মিজানুর রহমান বলেন, দক্ষিণাঞ্চলে এই প্রথম কোনো ১৭ তলা সরকারি ভবন হতে যাচ্ছে। এ ভবনে উন্নত বিশ্বের মতোই থাকবে চিকিৎসার সকল সুযোগ-সুবিধা। রোগী, স্বজন এবং চিকিৎসকদের জন্যে থাকবে চলন্ত সিড়ি, ভিন্ন ভিন্ন লিফট, সেন্ট্রাল এসি, ফায়ার লিফট ও নিজস্ব সাবষ্টেশন ব্যবস্থা।
তিনি আরও বলেন, অর্থ বরাদ্দ সংকট ও দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করা সম্ভব হয়নি। তবে দক্ষিণাঞ্চলবাসীর উন্নত চিকিৎসার কথা মাথায় রেখে কাজটির গুনগত মান সঠিক রেখে করা হয়েছে। যার সুফল এ অঞ্চলের মানুষ শতবছর ভোগ করতে পারবেন। আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে ভবনটি হস্তান্তর করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বরিশাল গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়সাল আলম বলেন, অর্থ বরাদ্দ না থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিল পরিশোধে দেরির কারণেই নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। তবে শীঘ্রই নির্মাণকাজ শেষ করে ভবনটি হস্তান্তর করা হবে।