শরণখোলা উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে মাত্র দুইজন ডাক্তার দিয়ে চলছে দেড় লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটিতে ১৮টি মেডিকেল অফিসারের পদ শূণ্য রয়েছে। এ ছাড়া জুনিয়র মেকানিক, রেডিওগ্রাফার, সুইপার, আয়া, ওয়ার্ড বয়ের সংকট থাকায় নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। ডাক্তার সংকটে হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ সমস্যা সমাধানের জন্য অবহিত করা হলেও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। শরণখোলা হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ৫০ শয্যা বেডের এ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২২ টি চিকিৎসকের বিপরীতে চারজন চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা সেবার কাজ চলে আসছিলো। সম্প্রতি দুইজন চিকিৎসককে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও খুলনা কোভিড হাসপাতালে সংযুক্তিতে পাঠানো হয়েছে। শরণখোলা হাসপাতালের বহিবির্ভাগে প্রতিদিন ২/৩ শ রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। ৫০ বেডের এ হাসপাতালে প্রায়ই ভর্তি থাকেন ৮০/৯০ জন রোগী। জরুরী বিভাগেও প্রতিনিয়ত অসংখ্য রোগী আসেন চিকিৎসা নিতে। দুইজন চিকিৎসকের পক্ষে এত সব রোগীদের সেবা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। অনেক রোগী বাধ্য হয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি হচ্ছেন। শনিবার সকালে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, অনেকক্ষণ সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে থেকে চিকিৎসককে দেখাতে না পেরে কয়েকজন রোগী ফিরে যাচ্ছেন। চিকিৎসা নিতে আসা রাজাপুর গ্রামের হোসনেয়ারা বেগম, খোন্তাকাটা গ্রামের সাইদুর রহমানসহ কয়েকজন রোগী বলেন, হাসপাতালে ডাক্তার কম থাকায় রোগ দেখাতে না পেরে ফিরে যাচ্ছি। হাসপাতালে জুনিয়র মেকানিকের পদ ৮/১০ বছর ধেরে শূন্য রয়েছে। এক্সরে বিভাগের রেডিওগ্রাফারের পদ শূন্য রয়েছে প্রায় ১ বছর ধরে। ৬ জন সুইপারের মধ্যে আছে মাত্র ১ জন। ২ জন আয়ার পদ থাকলেও দুটি পদই শূন্য রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। ওয়ার্ড বয় ৩ জনের মধ্যে আছে মাত্র ১ জন। জনবল সংকট থাকায় চিকিৎসা সেবা মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এ যেন দেখার কেউ নেই মনেহচ্ছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আশফাক হোসেন বলেন, হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে প্রশাসনিক কাজসহ বিভিন্ন দপ্তরে মিটিংয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। আমাদের দুইজন ডাক্তারকে হাসপাতালের আউটডোর ও ইনডোরে ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। রোগীর চাপে সময় মতো তাদের খাওয়া দাওয়া ও ঘুম হচ্ছেনা বলে ডাঃ আশফাক জানান। শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ প্রিয় গোপাল বিশ^াস বলেন, চিকিৎসকের অভাবে রোগীদের কাক্সিক্ষত সেবা দেওয়া যাচ্ছেনা। চারজন চিকিৎসকের দুইজন চিকিৎসককে খুলনা মেডিকেল কলেজে সংযুক্তি করায় চিকিৎসক সংকট দেখা দিয়েছে। তা ছাড়া এ বিভিন্ন ধরনের ১৮টি মেডিকেল অফিসারের পদ শূণ্য রয়েছে। হাসপাতালে নতুন করে জরুরী ভিত্তিতে কমপক্ষে ৩/৪ জন চিকিৎসক নিয়োগ করা প্রয়োজন। চিকিৎসক সংকটের তথ্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক ডা: মো: মনজুুরুল মুরশিদ এ প্রতিনিধিকে জানান, শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার সঙ্কটের বিষয়টি আমি অবগত আছি। হাসপাতালে অবশ্যই আরো চিকিৎসক দরকার। কিন্তু ডাক্তার পোষ্টিং দেয়া হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর (ডিজি) থেকে।