ফসল রক্ষায় কৃষকদের দেয়া বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ১০/১২ বছর বয়সী একটি মাদি বুনোহাতির মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাতে উপজেলার সীমান্তবর্তী পাহাড়ি গ্রাম বাতকুচি রাবার বাগান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শুক্রবার সকালে মধুটিলা ফরেষ্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা ও এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সদস্যরা মৃত হাতিটিকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন শেষে মাটিতে পুতে ফেলেন। এ ঘটনায় ওই এলাকার কৃষক শহিদুল ইসলামকে (৪০) আটক করা হয়েছে। তিনি ওই এলাকার মৃত ছোরহাব আলীর ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলা ইকোপার্কের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম। শুক্রবার সকালে সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) সাদিকুল ইসলাম খানসহ অন্যান্য বন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন। বন বিভাগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, এক সপ্তাহ ধরে ৩০ থেকে ৩৫ টি বুনোহাতির পাল উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের বিভিন্ন টিলায় ও জঙ্গলে অবস্থান করছে। দিনের বেলায় টিলা বা জঙ্গলে থাকে, সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে হাতির পাল ধানক্ষেতে ও লোকালয়ে দল বেঁধে নেমে আসে। কৃষকরা ফসল রক্ষায় মশাল জ¦ালিয়ে, ঢোল পিটিয়ে, হইহুল্লোড় করে হাতির পাল তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। উপজেলার বাতকুচি গ্রামের টিলাপাড়া এলাকায় পাহাড়ের ঢালে ৩০ থেকে ৪০ একর জমিতে আমনের আবাদ করা হয়েছে। বুনোহাতি থেকে ফসল রক্ষায় কৃষকরা জেনারেটর চালিয়ে বিদ্যুতের তার দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। বৃহস্পতিবার রাতে বুনোহাতি পাল সেই ফসল ক্ষেতে হানা দেয়। এ সময় একটি হাতি বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। মধুটিলা এলাকার বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন, আমন ও বোরো মৌসুমে বুনোহাতির অত্যাচার বাড়ে। এক সপ্তাহ ধরে বুনোহাতির পাল ফসল ক্ষেতে পাহাড় থেকে লোকালয়ে নেমে আসে। বাতকুচি রাবার বাগান এলাকায় ফসল রক্ষায় বিদ্যুতের তার দেয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার রাতে ওই তারে বিদ্যুতায়িত হয়ে একটি হাতির মৃত্যু হয়েছে। এ ব্যাপারে শেরপুরের সহকারী বনসংরক্ষক মো. সাদেকুল ইসলাম খান বলেন, বুনোহাতির মৃত্যুর খবর পেয়ে সরেজমিন পদির্শন করে জেনারেটর স্থাপন করে হাতি হত্যার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগে শহিদুল ইসলাম নামে একজনকে আটক ও একটি জেনারেটর জব্দ করা হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আরো ১০/১২ জনের নামে বন্যপ্রানী সংরক্ষণ আইনে শেরপুর আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। একই সঙ্গে সন্দেহভাজন বাকী আসামীদের আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি অরো জানান, আমরা বুনোহাতি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থদের সরকারীভাবে ক্ষতিপুরন দিচ্ছি। তাই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কোনোক্রমেই বুনোহাতি হত্যা করা যাবে না।