ঝিনাইদহ ৪ আসনের(কালীগঞ্জ)সাবেক এমপি বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও পর পর ৪ বারের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব এম শহীদুজ্জামান বেল্টু ইন্তেকাল করেছেন।"ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। রোববার সকালে শহীদুজ্জামান বেল্টু ঝিনাইদহ শহরের কলাবাগানাস্থ নিজ বাসভবনে হঠাৎ পড়ে যান। এতে তার কলার বোন ভেঙ্গে যায়। চিকিৎসা শেষে তিনি বাসায় অবস্থান করছিলেন। সোমবার বিকাল থেকে তার শরীরের অবস্থার অবনতি হতে থাকে। রাতে আরও অবনতি হয় এবং তিনি কথা বলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। পরে সোমবার রাত সাড়ে ১১টায় পরিবার তাকে নিয়ে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য রওনা হন। এ অবস্থায় তার বহনকারী অ্যাম্বুল্যান্স ঝিনাইদহ পোড়াহাটির তেল পাম্প পর্যন্ত পৌঁছলে তার শরীরের চরম অবনতি দেখা দিলে তাকে দ্রুত ঝিনাইদহ আড়াইশো বেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে রাত পৌনে ১২টায় হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত্যু ঘোষনা করেন। তিনি দীর্ঘদিন হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। শহীদুজ্জামান বেল্টু কালীগঞ্জ উপজেলার রাখালগাছি ইউনিয়নের হাসানহাটি গ্রামের বাসিন্দা ও দীর্ঘদিন তিনি ঝিনাইদহ শহরের কলাবাগান এলাকায় নিজ বাড়িতে বসবাস করতেন। মৃত্যু কালে তিনি স্ত্রী মোছা. মুর্শিদা জামান,এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক ছিলেন।
তিনি দীর্ঘদিন কালীগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি ও ঝিনাইদহ জেলা কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন এ ছাড়া বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন।
শহীদুজ্জামান বেল্টু ১৯৯১ সালে পঞ্চম,১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ সালে ষষ্ঠ, ১৯৯৬ সালের সপ্তম এবং ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দলের ধানের শিষ প্রতিকের প্রার্থী হিসাবে ঝিনাইদহ-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৫ সালে তিনি এলজিআরডি মন্ত্রনালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী উপকমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।শহিদুজ্জামান বেল্টু কালীগঞ্জ উপজেলার হাসানহাটি গ্রামের মাফি উদ্দিনের ছেলে। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ১৯৯১ সালে তিনি বিএনপিতে যোগ দিয়ে ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ উপজেলা ও সদর উপজেলার চারটি ইউনিয়ন) আসনে প্রথম বারের মতো সাংসদ নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে তিনি ওই আসনের সাংসদ নির্বাচিত হন।
মঙ্গলবার সকাল ১১টার সময় ঝিনাইদহ ওয়াজির আলী স্কুল মাঠে এবং দুপুর ২টায় কালীগঞ্জ সরকারী ভুষন স্কুল মাঠে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ এশার নামাজ শেষে তার গ্রামের বাড়ি কালীগঞ্জ উপজেলা হাসনহাটি গ্রামে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।বিএনপি নেতা শহীদুজ্জামান বেল্টুর মৃত্যুতে তার নিজ নির্বাচনী এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। এদিকে বিএনপি নেতা বেল্টুর মৃত্যুতে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল এ্যডঃ আসাদুজ্জামান,বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, স্বেচ্ছাসেক দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়ার সহ সাধারন সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি এমএ মজিদ, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা ও কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক হামিদুল ইসলাম হামিদ এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কালীগঞ্জে শাখার আমীর ওলিয়ার রহমান,মাওলানা আবু তালিব গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।