নাটোরের সিংড়ায় আবু বক্কর সিদ্দিক নামের এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে নারী শিক্ষকের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযুক্ত আবু বক্কর সিদ্দিক উপজেলার চৌগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ের কম্পিউটার ডেমোনেষ্টটর প্রদর্শক (কর্মচারী) ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং চৌগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। সম্প্রতি অত্র প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পৃথক দুটি লিখিত অভিযোগ করেন অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও এলাকাবাসী। লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, আবু বক্কর সিদ্দিক দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে অধিকাংশ সময় প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকেন। হাজিরা খাতায় তার পরিবর্তে স্বাক্ষর করেন তার স্ত্রী একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ট্রেড শিক্ষক শিউলি খাতুন। এই নিয়ে কেউ কথা বলতে গেলেই তাকে হেনেস্থা করা হয়। এদিকে চলতি মাসের ৫ তারিখে বিশ^ শিক্ষক দিবসের আলোচনা সভায় স্টার্ফ রুমে ঢুকে হঠাৎ সিনিয়র শিক্ষকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। প্রতিবাদ করায় প্রতিষ্ঠানের সাধারণ শাখার সিনিয়র নারী শিক্ষক গোলেনূর আব্বাস এর সাথেও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন কর্মচারী আবু বক্কর সিদ্দিক। আর প্রতিষ্ঠানে কোন অনুষ্ঠান, কোন পরিক্ষা সংক্রান্ত কমিটি সহ সকল কিছুই বড় জোড় গলায় তিনিই যা ইচ্ছে করে থাকেন। তার সকল অপকর্ম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের কেউ প্রতিবাদ করলে হেনেস্তার শিকার হন বলে ভয়ে কেউ মুখ খুলেন না অভিযোগ করেন শিক্ষকরা। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের দোকান ঘর ভাড়া ও জামানতের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। এলাকাবাসীরা আরো জানান, আ.লীগ নেতা আবু বক্কর সিদ্দিক সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের আস্থাভাজন হওয়ার প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম করেছেন। যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানান। অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা ও স্থানীয় ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তার দ্বারা প্রতিষ্ঠানের অনেকেই নির্যাতিত হয়েছেন। অনেক সময় তার অনুপস্থিতিতে হাজিরা খাতায় তার নামে স্বাক্ষর করেছেন বউ শিউলি খাতুন। তবে বর্তমানে সে নিয়মিত প্রতিষ্ঠানে আসছেন। আর গত ৫ অক্টোবর বিশ^ শিক্ষক দিবসের আলোচনা সভায় স্টার্ফ রুমে শিক্ষকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়টি ইউএনও কে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। সেই লিখিত অভিযোগে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে তিনি জোড় সুপারিশও করেছেন। অভিযুক্ত কর্মচারী আবু বক্কর সিদ্দিক এর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার স্ত্রী শিউলি খাতুন মুঠোফোনে বলেন, তার স্বামী একটু বাহিরে আছেন তাই ফোন বন্ধ রয়েছে। আর স্বামীর হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুর রহমান বলেন, দুটি লিখিত অভিযোগের তদন্তের জন্য তার ওপর দায়িত্ব দিয়েছেন ইউএনও। দ্রুতই তদন্ত প্রতিবেদন জনা দেয়া রহবে। অত্র প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হা-মীম তাবাসসুম প্রভা বলেন, শিক্ষক ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে দুটি আলাদা লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্ত প্রতিবেদনের পর যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।