পূজামন্ডপের ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে দুই মেট্রিক টন সরকারি বরাদ্দের চাল উত্তোলন করে কালোবাজারে কম দামে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলার গৌরনদী উপজেলা দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি দুলাল রায় দুলুর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেছেন কমিটির অন্যান্য সদস্যরা।
এছাড়াও স্বেচ্ছাসেবক কার্ড তৈরি এবং পিআইও অফিসের খরচের নামে চার লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছেন সভাপতির বিরুদ্ধে। তার এ অনিয়মের প্রতিবাদ করায় হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রবীণ ব্যবসায়ীদের চরম নাজেহালসহ বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদর্শন করেছেন সভাপতি দুলাল রায়। এসব অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে উপজেলা দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির চার সদস্য ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন।
পূজা উদযাপন কমিটির পদত্যাগকারী যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রেমানন্দ ঘরামী অভিযোগ করে বলেন, উপজেলার ৮৫টি পূজামন্ডপে সরকারিভাবে সাড়ে ৪২ মেট্রিকটন চাল বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতিটি পূজামন্ডপে পাঁচশ’ কেজি করে চাল বরাদ্দ পায়। কিন্তু সিন্ডিকেটের মধ্যমে বরাদ্দের পাঁচশ’ কেজি চাল ৩৮ টাকা দরে মোট ১৯ হাজার টাকায় কালোবাজারে বিক্রি করেন পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দুলাল রায় দুলু। এ বছর তালিকা অনুযায়ী গৌরনদীতে ৮৫টি মন্ডপে পূজা উদযাপন করার কথা উল্লেখ থাকলেও বড় কসবা পালপাড়া এলাকার মৃত কার্তিক পালের বাড়ি দুর্গাপূজা মন্দির, আধুনা গ্রামের রানু ভট্টাচার্যের বাড়ি পূজামন্ডপ ও মেদাকুল গ্রামের ভূইয়া বাড়ি পূজামন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়নি। পাশাপাশি মেদাকুল গ্রামের বলরাম পোদ্দারের বাড়ির মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হলেও তারা কোন বছরই সরকারি অনুদান গ্রহণ করেন না।
প্রেমানন্দ ঘরামী আরও অভিযোগ করেন, কমিটির সভাপতি দুলাল রায় দুলুর চরম অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে তিনিসহ কমিটির সহসভাপতি সুজিত চন্দ্র বাড়ৈ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বিপুল হালদার, সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক অশোক গোস্বামী কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দুলাল রায় দুলু বলেন, পূজা কমিটির একটা খরচ আছে। স্বেচ্ছাসেবীদের কার্ড বাবদ পাঁচশ’ টাকা কেটে নেওয়া হলে তখন সবাই সাংবাদিকদের জানায়। পূজা মন্ডপের সভাপতি ও সম্পাদকদের সর্বসম্মতিক্রমে বরাদ্দকৃত সরকারি চাল বিক্রি করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ীদের নাজেহাল, কালোবাজারে চাল বিক্রি করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগের কোন সত্যতা নেই।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন বলেন, চিকিৎসার জন্য ঢাকায় থাকার কারণে আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না। উপজেলা খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ শিহাব উদ্দিন বলেন, কে বা কারা চাল বিক্রি করেছেন বা কিনেছেন আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না।