সামনের দুর্গা পূজার ছুটিতে বাড়ি আসতে চেয়েছিলেন পরিবারের সাথে পুজা করতে। মোবাইলে বাবা-মাকে জারিয়েছিল বাড়ির সবার জন্য পুজার পোশাকসহ বিভিন্ন জিনিস কিনে বাড়িতে পূজার ছুটিতে আসবেন। কিন্তু না সবই ওলট-পালট করে দিল আগুন। ছুটির আগেই চট্রগ্রামের পতেঙ্গায় জাহাজে আগুন লেগে প্রান হারিয়েছেন কবিরপুর গ্রামের মানিক সাহার ছেলে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার সৌরভ কুমার সাহা।
সৌরভ নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান। বাবা মানিক সাহা ছোট্ট একটা মুদি দোকান ব্যবসায়ি। দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে সৌরভ।বাবা মানিক সাহা জানান,সৌরভ বরিশাল মেরিন একাডেমি থেকে পাস করে আগস্টেই বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনে যোগ দিয়েছিলেন। তার চাকরির বয়স মাত্র ২ মাস। সব সামর্থ্য দিয়ে ছেলেকে লেখাপড়া করিয়েছিলেন তারা। সেই স্বপ্ন মুহূর্তেই আগুনে পুড়ে গেছে।গত ৩০ সেপ্টেম্বর বন্দরের ডলফিন জেটিতে নোঙর করা একটি তেলের জাহাজে (অয়েল ট্যাংকার) বিস্ফোরণের পর আগুন লাগার ঘটনায় দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। তন্মধ্যে সৌরভ কুমার সাহা আগুনে পুড়ে মারা যায়। ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফ হাসনাত জানান, ইস্টার্ন রিফাইনারির ডলফিন জেটিতে বিএসসির জাহাজ বাংলার জ্যোতিতে আগুন ধোরে যায়। আগুনে সৌরভ কুমার সাহা ডেক ক্যাডেট পুড়ে মারা যায়। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। দুপুর ১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
সৌরভের প্রতিবেশি নিপুণ বিশ্বাস বলেন, সৌরভদের পরিবার নিম্নবিত্ত। ছোটবেলা থেকেই সে অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিল। তার বাবা খুব কষ্ট করে তাকে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার পড়িয়েছিলেন। সৌরভের দাদু শচীন সাহা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, সে বলেছিল পূজার ছুটিতে বাড়িতে আসবে ও পরিবারের সবার জন্য পুজার পোশাক কিনে আনবে। কিন্তু তার আসা আর হলো পুরন হল না। আমাদের পরিবারের সব শেষ হয়ে গেছে। শৈলকুপার কবিরপুর গ্রামে এলাকার মানুষের মধ্যে যেন শোক চলছে ও সৌরভ কুমার সাহার পরিবারের সদস্যদের কান্না থামছে না।
উল্লেখ্য গত ৩০ সেপ্টেম্বর চট্রগাম বন্দরের ডলফিন জেটিতে নোঙ্গর করা এমটি বাংলার জ্যোতিতে অগ্নিকান্ডের পর যে ২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে তার মধ্যে সৌরভ রয়েছেন।