পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী আনিছুর রহমানের পরিবারকে অচেতন করে প্রায় ১৩ ভরিস্বর্ণালঙ্গার ও কয়েক হাজার টাকা চুরি হয়েছে। জানা যায় গত সোমবার দিবাগত রাত ১০ টা থেকে ১২ টার মধ্যে এই চুরির ঘটনাটি ঘটেছে। সাবেক চেয়ারম্যান জানান তার কাছে সেদিন রাতে ৯ টায় একজন অপরিচিত যুবক তার পিতার অসুখ বলে টাকা চাইতে আসে। তিনি ওই যুবককে ভালভাবে চিনতেও পারেননি। তার বাবার চিকিৎসার জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে দরখাস্ত করার পরামর্শও দেন এবং বাড়িতে নিয়ে তাকে কিছু টাকা সহযোগিতা করেন। পরে ঘরের বারান্দায় থাকা পানির জগ থেকে এক গ্লাস পানি খেয়ে টিভি দেখার জন্য চেয়ারে বসেন এবং গভীর ঘুমে নিমজ্জিত হন। রাত অনুমান ১১ টায় প্রকৃতির ডাকে কিছুটা চেতন হলেও দু’পায়ে শাক্তি ছিলনা বলে জানান। তবু কিছুটা কষ্ট করে বাথরুমে যাবার জন্য বের হলে একবার ঘুম আচ্ছন্ন থাকায় পড়ে যান। আবারও উঠে দেওয়াল ধরে কোন মতে বাথরুম সেরে রাতের খাবার না খেয়ে বিছানায় শুয়ে পড়েন। এমনকি ঘরে দরজা ও বাহিরের গেট বন্ধ করতে ভুলে যান। তখন তিনি এতটাই ঘুমের ঘোরে আচ্ছন্ন বলে চোখ খুলে কাউকে ডাকবেন বা স্ত্রীকেও কিছু জানাতে পারেননি। সকাল অনুমান ৮ টার সময় চেয়ারম্যানের সহধর্মীনি ঘুম চেতন হলে দেখে তার ঘরের আলমিরার ডয়ার ভাঙ্গা ও স্বর্ণালঙ্কার নাই বলে চেয়ারম্যানকে ডেকে জানান। পরক্ষণে চেয়ারম্যানের শোয়ার ঘরে খাটের পাশে রাখা ছোট বক্স টেবিলটা নাই দেখতে পান। সাবেক চেয়ারম্যান কাজী আনিছুর রহমান জানান এ ঘটনায় তার ঘরের আলমিরার ডয়ারে থাকা প্রায় ১৩ ভরি স্বর্ণালঙ্কার এবং বক্স টেবিলে থাকা নগদ ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন চোরেরা নিয়ে গেছে। কয়েক ঘন্টার মধ্যে ঘটনাটি জানাজানি হলে প্রতিবেশিরা ঘটনাস্থলে আসার সময় মোবাইল ফোন দুটি বাড়ির অদূরে পেয়ে তাদের কাছে জমা দিয়েছে। তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শ করে গেছে। তিনি এ ব্যাপারে মামলা করবেন বলে জানান। উল্লেখ্য যে, ২০২২-২৩ সালে তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা, সিপাইপাড়া, তিরনই, ভজনপুর, শালবাহান রোড এবং পঞ্চগড় জেলা শহরের বেশ কিছু বাড়িতে এবং পঞ্চগড় তেঁতুলিয়া মহাসড়কে যাত্রীবাহি বাসে অজ্ঞান পার্টি বা মলম পার্টি চুরির ঘটনা ঘটে। তখন পঞ্চগড় জেলা পুলিশের নেতৃত্বে গোপনে অভিযান চালিয়ে অজ্ঞান পার্টির ৬-৭ জনকে গ্রেপ্তার করে জেলা হাজতে পাঠান। এরপর দীর্ঘদিন মলম পার্টি বা অজ্ঞান পার্টি চুরির ঘটনা ঘটেনি। গত ১৭সেপ্টেম্বর/২৪ তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের নামাগছ গ্রামে সকালে খাবার খেয়ে শিশুসহ ৬ জন গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে পড়ে। হঠাৎ করে অজ্ঞান পার্টি বা মলম পার্টি চোরের ফের তৎপরাতা বাড়ায় জানমালের নিরাপত্তাহীনতায় একরকমে সংজ্ঞা ও ভয়ভীতি দেখা দিয়েছে। তেঁতুলিয়া মডেল থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ, প্রবীর এর নিকট মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি জরুরি মিটিং এ পঞ্চগড়ে আসায় চুরির ঘটনাটি শোনে পুলিশের একজন অফিসার সেখানে পাঠিয়েছি। ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণের পাশাপাশি মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে।