পুঠিয়ায় ডিএফইডি নামের এনজিওর নিকট গ্রাহকরা ঋণের টাকা নিয়ে মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে। সঠিক সময়ে কিস্তি টাকা পরিশোধ করতে না পাড়ায় একাধিক গ্রাহকের বিরুদ্ধে ব্যাংকের চেক বইয়ের পাতা দিয়ে কোর্টে মামলা করার অভিযোগ উঠেছে এবং অনেকে জেল পর্যন্ত খেটেছেন। গ্রামঞ্চলের সাধারণ মানুষ অভাব-অনটনের তাড়নায় যখন এনজিওর নিকট হতে ঋণ কিস্তি হিসাবে সাধারণত যারা নিয়ে থাকেন। আর এই সুযোগে এনজিওর কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের নিকটে প্রথমে ব্যাংকে ফাঁকা চেকের পাতা এবং তিনশত টাকা মূল্যের ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে রাখেন। পুঠিয়া সদরের ব্যবসায়ী মারুফ ডাম ফাউন্ডেশন ফর ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (ডিএফইডি) এনজিওর নিকট ফাঁকা চেকের পাতা দিয়ে সে ৩ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ছিলেন। টাকা পরিশোধের পর সে চেকের পাতা ফিরত চাইলে এনজিওর ক্যাশিয়ার তার নিকট ১০ লাখ টাকা পাবে বলে মামলা করার হুমকি দেয়। মারুফের মতো একাধিক ডিএফইডির গ্রাহকরা অভিযোগ,এনজিওটি কিস্তির টাকা পরিশোধ করার পরও তাদের ব্যাংকের চেক বইয়ের পাতা দিতে কর্তৃপক্ষ গরিমর্শি ও তালবাহনা করে। এরপর কিস্তির টাকা দিতে বিলম্ব হলে তাদের নামে কোর্টে মামলা করার হয়েছে। এই এনজিও একাধিক মানুষকে জিম্মি করে রেখেছেন। আ.লীগ শাসন আমলে এনজিওর গ্রাহকদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করার নজির রয়েছে। পৌর সদরের বাহার উদ্দিন ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ছিল। ৩০ হাজার টাকার কিস্তি না দিতে পাড়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। অসুস্থ থাকায় কোর্ট তাকে টাকা নিয়ে ছেড়ে দিয়ে ছিল। পৌর এলাকার নিমতলার ব্যবসায়ী সেলিম হোসেন ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে সঠিক সময়ে কিস্তি না দিতে পারায়,তার নামে মামলা হয়েছে। সে গ্রেপ্তার হওয়ার ভয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন। সদর ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামের সৌদী প্রবাসী মামুনের স্ত্রী রুপালি বেগম ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ছিল। রুপালিল মা ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ায় দুটি কিস্তি না দেওয়ায় তার নামেও মামলা হয়েছে, খেটেছেন জেল। পালোপাড়া তাহেরের মোড়ে রফিকুল ইসলাম ১৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ছিল। একটি ভুয়া মামলার কাগজ দিয়ে ভয় দেখায়। দক্ষিণ পালোপাড়া গ্রামের রেজাউল ইসলামের স্ত্রী জলি বেগম ৪০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ছিল। স্বামী তালাক দেওয়ায় সে কিস্তি দিতে না পারায় আগামী সোমবার কোর্টে মামলার হাজিরা দেওয়ার তারিখ হয়েছে। তাহেরের মোড় পশ্চিমপাড়ার গোলবারের স্ত্রী স্থানীয় জুট মিলে কাজ করে অপারেশন রোগী ওষুধ না খেয়েও এনজিওর হুমকিতে কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে বাধ্য হচ্ছেণ। রুপালি বেগম বলেন, পরিবারের অভাব-অনটনের কারণে কিস্তির টাকা দিতে পরিনি। তার ভিতর আমার নামে কোর্টে মামলা করা হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তাদের দাবি আমাদের নিকটে এনজিও এত টাকা পারে না। কিন্তু অনেক বেশি টাকা দাবি করে কোর্র্টে তারা মামলা করেছে। আমরা এনজিওর নিকট যারা কিস্তির হিসাবে ঋণ নেয়। তারা কেউ ধনী না। অভাবের তাড়নায় বাধ্য হয়ে টাকা ঋণ নিয়ে থাকি। ডিএফইডি ঋণ নেওয়ার পর অভাবের তাড়নায় কয়েকটি কিস্তি সঠিক সময়ে না দিতে পাড়ায় ঢালাও ভাবে চেকের মামলা দিয়ে আমাদের এনজিওটি জিম্মি করে রেখেছেন। তারপর সময় মতো কিস্তি টাকা দিতে না পারলে এনজিওর মাঠকর্মী এবং ব্রাঞ্চ ম্যানেজার আশরাফুল ইসলাম নিজে গিয়ে গ্রাহকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন, আবদুল লতিফ বলেন, ম্যানেজার আসরাফুল ইসলাম সন্ত্রাসী বাহিনীর ক্যাডারের মত কথা বলেন। সে এমপি, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আ.লীগের পক্ষে নির্বাচনীয় মাঠে থেকে সরাসরি ভোট দেওয়ার জন্য গ্রাহকদের বিভিন্ন ভাবে চাপ সৃষ্টি করে ছিল। এই এনজিওর কর্মী এবং ম্যানেজারের আচার-ব্যবহারে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে ডাম ফাউন্ডেশন ফর ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (ডিএফইডি) ব্রাঞ্চ ম্যানেজার আশরাফুল ইসলাম বলেন, এনজিও সকল বিষয় অস্বীকার করে বলেন,দির্ঘদিন যাবত যারা কিস্তির টাকা পরিশোধ করেনি। শুধু তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।