বাড়তি খরচ, কীটনাশক ও সেচ সুবিধার প্রয়োজন না হওয়ায় শেরপুরে বস্তায় আদা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে বস্তায় আদা চাষ। বস্তায় আদা চাষের জন্য আলাদা করে জমির দরকার নেই। এই পদ্ধতিতে একদিকে যেমন মাটিবাহিত রোগের আক্রমণ অনেক কমে যায়, অন্যদিকে প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে বস্তা অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। বিশেষ করে ছায়াযুক্ত পরিত্যক্ত জায়গাতে এই পদ্ধতিতে চাষ করা যায়। এ ছাড়াও রোগ কম হওয়ায় জেলার ৫টি উপজেলায় অনেক কৃষক বাণিজ্যিকভাবে করছে আদা চাষ। এবার জেলার ৫টি উপজেলায় ৬ লাখ ৯৩ হাজার বস্তায় আদা চাষ হয়েছে। জেলা কৃষি বিভাগ বলছে আগামী বছর বস্তায় বাণিজ্যিকভাবে আদা আবাদ হবে এবারের চেয়ে দ্বিগুণ।
জানা যায়, শেরপুর সদর উপজেলার গাজির খামার এলাকার কৃষক তারিফ হাসান ব্যবসার পাশাপাশি তার বাড়ির পাশে পতিত জমিতে বস্তায় আদা চাষ করেছেন। তার এক বিঘা জমিতে ৪ হাজার বস্তায় লাগিয়েছেন আদা। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। তবে যে পরিমাণ ফলন হয়েছে তাতে তারিফ আশা করছেন সব মিলিয়ে তার ৩ লাখ টাকা আয় হবে। এ ব্যাপারে আদা চাষি তারিফ হাসান বলেন, সদর উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতা নিয়ে নতুন পদ্ধতিতে বস্তায় আদা চাষ করেছি। আমি আশাবাদী এই পদ্ধতিতে আদা চাষ করে অল্প খরচে অধিক লাভবান হওয়ায় যায়। আমার কাছ থেকে অন্তত ৩০ জন কৃষক আদা চাষের পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। আমি সামনের বছর আরও জমির পরিমাণ বৃদ্ধি করবো। স্থানীয় কৃষক ছমির উদ্দিন বলেন, আমি আগে মাটির নিচে আদা চাষ করতাম। কিন্তু লাভের মুখ দেখতে পাইনি। এবার বস্তায় আদা চাষে লাভবান হয়েছি।
কৃষক আহমেদ আলী বলেন, আমার বড় একটা পরিত্যক্ত জায়গা অনেকদিন থেকে পতিত পড়ে আছে যা সম্পূর্ণ বাঁশবাগানের নিচে। এখানে আদা চাষ হবে কল্পনাও করতে পারিনি। এখানে আদা চাষ করাতে আমার সংসারে বড় একটা আয়ের ব্যবস্থা হয়েছে।
শেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক কৃষিবিদ হুমায়ুন কবীর বলেন, এবার জেলার ৫টি উপজেলায় ৬ লাখ ৯৩ হাজার বস্তায় আদা চাষ হয়েছে। আদা চাষে আগ্রহী করতে আমরা মাঠপর্যায়ে কাজ করছি। এ ছাড়াও কৃষি প্রণোদনা, সার ও বিষ দিচ্ছি। এ ছাড়াও বস্তার মাটি তৈরি থেকে শুরু করে আদা উত্তোলন পর্যন্ত সকল প্রকার কৃষি পরামর্শ ও সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে।