বিদেশ থেকে ফিরে এসে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাঁদা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে তানভীর অপু নামে এক প্রবাসীর বিরুদ্ধে। মো. মনিরুজ্জামান নামে ভুক্তভোগী এক ব্যক্তি গত ০২ জুলাই, ২০২৪ তারিখে ঢাকার কলাবাগান থানায় এ বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন (জিডি নং- ৮০, তারিখ: ০২/০৭/২০২৪)। জিডি সূত্রে জানা যায়, অভিযোগকারীর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে (০১৭২২-৭০২৮০৪) অভিযুক্ত তানভীর অপু তার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর (০১৭০৫-৫০৫৫৩৬) থেকে হুমকি দিয়ে বিভিন্ন মেসেজ পাঠান।
এ ছাড়া ওই নম্বর থেকে অভিযোগকারীর মোবাইলে কল করে চাঁদা দাবি করেন ও প্রাণ নাশেরও হুমকি দেন বলেও জিডিতে উল্লেখ করা হয়। জিডি সূত্রে জানা যায়, সেসময় কলাবাগান থানার এসআই (নিরস্ত্র) মো. বুলবুল আহম্মেদকে ডায়েরির বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন কলাবাগান থানার ওসি মো. মফিজুল আলম।
অভিযোগকারী জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমানের নাম ভাঙিয়ে এসব চাঁদা দাবি করছেন তানভীর অপু। যাদের কাছে চাঁদা চাওয়া হয়েছে তাদের কাছে হোসেন জিল্লুর রহমানের সাথে নিজের ছবি পাঠাচ্ছেন তিনি। অভিযোগকারী আরও জানান, ফিনল্যান্ড প্রবাসী তানভীর অপু নিজেকে বিশ্ব পর্যটক হিসেবে পরিচয় দেন। তার পাঠানো হুমকি ও মেসেজ বিশ্লেষণে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে চাঁদা চাওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। পাশাপাশি অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করেন তিনি। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়ারও হুমকি দিচ্ছেন এই ব্যক্তি। তাছাড়া চাঁদা না দিলে যাকে তাকে গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই দিয়ে উঠিয়ে নেওয়ারও হুমকি দিচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এর আগে এক সংবাদকর্মীকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় তানভীর অপুর বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করা হয়। পরিস্থিতি বুঝে সেসময় ফিনল্যান্ডে পালিয়ে যান তানভীর। গত ১৭ আগস্ট দেশে এসে আবার চাঁদাদাবীসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। রাজশাহীর শিরোইলে জন্মগ্রহণকারী তানভীর অপুর বিরুদ্ধে তার প্রথম স্ত্রী ছাড়াও দেশে-বিদেশে অনেক মানুষের অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে। তার ফেসবুক প্রোফাইল ঘেঁটে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ নেতা রাজশাহীর সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবেই ওই এলাকায় পরিচিত অপু। এ ছাড়া ওবায়দুল কাদেরসহ বিগত সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, এমপির সাথে ঘনিষ্ঠ ছবি ফেসবুক জুড়ে।
সর্বশেষ, গত সোমবার চাঁদা চাওয়ার বিষয়টি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বায়ক হাসনাত আবদুল্লার দৃষ্টি গোচর হলে হাসনাত নিজে ফোন করে তানভীর অপুকে এসব থেকে বিরত থাকতে বলেন।
প্রাতিষ্ঠানিক সুনাম রক্ষার্থে অভিযোগকারী ব্যক্তিরা সংবাদে তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন সরকার যখন দেশ গঠনে ব্যস্ত তখন বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করছে তানভীর অপুর মত ব্যক্তিরা। তাদের ব্যাপারে সমাজের সকলকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন ভুক্তভোগীরা।
এসব বিষয়ে জানতে চেয়ে বারবার তানভীর অপুর মোবাইল নম্বরে (০১৭০৫-৫০৫৫৩৬) যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোন সাড়া দেননি।