সারা দেশে যখন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আর রং তুলির আঁচরে ফুটে উঠছে ওয়াল, তখন পরিবেশ দূষণের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা এবং আগামী প্রজন্মকে সচেতন করতে ব্যাতিক্রমী আয়োজন করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন চলো স্বপ্ন ছুঁই। তারা খালি প্লাষ্টিকের বোতলের বদলে ৪ শতাধিক শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দিয়েছেন গাছের চারা। অব্যবহৃত প্লাস্টিক বোতল জমা দিলেই উপহার হিসেবে একটি করে গাছের চারা প্রদান করা হয়েছে উপজেলার কল্যাণী ইউনিয়নের কল্যাণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ শতাধিক শিক্ষার্থীর মাঝে।
মঙ্গলবার সকালে ব্যাতিক্রমী এ আয়োজন করা হয় বিদ্যালয় চত্ত্বরে। ‘ইকো ট্রেড বাংলাদেশ’ নামে কর্মসূচির আওতায় প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যেই সচেতনতা তৈরি করতে এ উদ্যোগ গ্রহন করে ‘চলো স্বপ্ন ছুঁই সংগঠন। এ সময় সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা আফজাল হোসেন, কল্যাণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা: সুফিয়া বেগম ও ‘চলো স্বপ্ন ছুঁই’ এর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত শুক্রবার বিকেলে সংগঠনটি রংপুর শহরের মেডিকেল মোড় থেকে ধাপ পর্যন্ত রোড ডিভাইডারে তিন শতাধিক শোভাবর্ধনকারী বৃক্ষ রোপণ করে। সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা একত্র হয়ে বৃক্ষরোপণের কাজ করেন। বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির শ্লোগান ছিল ‘সবুজ রংপুর, নবপ্রাণ প্রকৃতি’, যা প্রকৃতির প্রতি দায়িত্বশীলতা ও পরিবেশের প্রতি স্নেহ প্রদর্শনের একটি শক্তিশালী বার্তা প্রদান করে।
কল্যাণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমি জানতাম না প্লাস্টিক বোতল ক্ষতিকর। আজ যখন জানলাম, তখন একটি প্লাস্টিক বোতল সংগ্রহ করে জমা দিয়ে একটি গাছ উপহার পেয়েছি। গাছটি বাড়িতে নিয়ে রোপন করবো।”
চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আফরিন সুলতানা বলেন, “আমি খুব খুশি যে প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে একটি গাছ পেয়েছি। আমার মা বলেছিলেন, গাছ লাগালে আমাদের পৃথিবী সুন্দর থাকবে। আমি এই গাছটি বাড়িতে লাগাব এবং যতœ নেব। প্লাস্টিকের বোতল না ফেলতে আমি আমার বন্ধুদেরও বলব।”
সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা মো: মুহতাসিম আবশাদ জিসান বলেন, “প্লাস্টিক দূষণ বর্তমান পৃথিবীর জন্য একটি বড় হুমকি। এই হুমকি থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। আমরা চাই, ছোটদের মধ্যেই সচেতনতা তৈরি করতে। আমরা একটি বার্তা দিতে চেয়েছি প্লাস্টিকের অপব্যবহার রোধ করা, গাছ লাগানো। মানুষকে প্লাস্টিক দূষণের ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন করা। আমাদের সদস্যরা সবসময় সমাজের উন্নয়ন এবং পরিবেশের সুরক্ষায় নিবেদিত। ভবিষ্যতেও আমরা এ ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাব।”