যশোরের মণিরামপুরে গরীব ও দুস্থ রোগীদের মাঝে চেক বিতরণ অনুষ্ঠান চলাকালে দু’পক্ষের মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার দুপুরে মণিরামপুর উপজেলা পরিষদ হলরুমের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় এমপির ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মী ও পুলিশের এক ডিএসবিসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।
ঘটনার পর দু’পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। খবর পেয়ে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সার্কেল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে থানায় পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সূত্রমতে, শনিবার দুপুরে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে গরীব ও দুস্থ রোগীদের মধ্যে চেক বিতরণের অনুষ্ঠান চলছিলো। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য এস এম ইয়াকুব আলী এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলু বিশেষ অতিথি ছিলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সন্দীপ ঘোষ ও থানার ওসি এবিএম মেহেদী মাসুদ উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, অনুষ্ঠান চলাকালে হলরুমের বারান্দায় ধুমপান করা নিয়ে দুই জনপ্রতিনিধির কর্মীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। একপর্যায়ে তা দু’পক্ষের মধ্যে হামলার ঘটনায় রুপ নেয়। হট্টোগোল শুনে মঞ্চ থেকে নেমে আসেন উপজেলা চেয়ারম্যান। এগিয়ে আসেন সংসদ সদস্যর নিরাপত্তা কর্মী শহিদুল ইসলাম ও ডিএসবির এএসআই ফিরোজ হোসেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করতে গিয়ে মারপিটের শিকার হন এমপির নিরাপত্তা কর্মী শহিদুল ইসলাম ও ডিএসবি ফিরোজ হোসেন।
এছাড়া দু’পক্ষের মধ্যে হামলার ঘটনায় আহত হন ছাত্রলীগের এস এম বাপ্পী, আবু বক্কর, আবু সালেহ, রিয়াদ হোসেন, আলী কদর, পরশসহ কমপক্ষে ১০ জন। আহতদের মধ্যে ৫ জন মণিরামপুর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন বলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ তন্ময় বিশ্বাস জানিয়েছেন।
এদিকে, খবর পেয়ে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হুসাইন, সহকারি পুলিশ সুপার আবু দাউদসহ প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনের সংসদ সদস্য এস এম ইয়াকুব আলী বলেন, সরকারী প্রোগ্রাম চলাকালে উপজেলা চেয়ারম্যান হঠাৎ মঞ্চ থেকে নেমে গেলেন। এমনকি তার অনুসারীরা আমার ব্যক্তিগত নিরাপত্তাকর্মী ও ছাত্রলীগের নেতাদের উপর হামলা করা বিষয়টি আমার কাছে বোধগম্য নয়। যারা এ ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। এ ঘটনায় শনিবার বিকেলে এমপির ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মী শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় এজাহার দায়ের করেছেন বলে এমপি জানিয়েছেন।
অপর দিকে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলু বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি দাবী করেন, অনুষ্ঠান চলাকালে হলরুমের বারান্দায় এক যুবক ধুমপান করছিল। আমার কর্মীরা তাকে নিষেধ করায় তাদের উপর চড়াও হয়। এ সময় তারা আমার তিন কর্মীকে মারপিট করে আহত করে। রিপোর্ট লেখার আগ পর্যন্ত এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছিলো বলে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জানান।
মণিরামপুর থানার ওসি এবিএম মেহেদি মাসুদ এ প্রতিবেদককে রাত ৮টা ৪০ মিনিটের সময় জানান এ ঘটনায় কোন পক্ষই অভিযোগ দেয়নি।