জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার পোল্যাকান্দি নামাপাড়া এলাকায় বন্যারপানি কমতে শুরু করায় ব্রহ্মপুত্র নদে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদের ভাঙ্গনে বিলীন হয়েছে প্রায় ১৫/২০টি বসতভিটা ফসলি জমি। ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছেন নদী পাড়ের মানুষের।
ইতোমধ্যে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স ও উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মুন্নী আক্তার এলাকায় পরিদর্শন করেছেন।
পরিদর্শন শেষে ভাঙ্গন কবলিত অসহায় মানুষকে ত্রাণ বিতরণ করতে গেলে তারা দাবী করেন, আমরা ত্রান চাই না। আমরা স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ চাই। তারা আরো বলেন,আমাদের ব্রহ্মপুত্রের নদের ভাঙনে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছি। আমাদের দিন কাটে অনাহারে অর্ধহারে।নদের ভাঙ্গন আতঙ্কে রয়েছি সার্বক্ষণিক। আমরা শুধ ুব্রহ্মপুত্র ভাঙন থেকে মুক্তি চাই। ত্রাণ সহায়তা চাইনা আমরা। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চিকাজানী ইউপি চেয়ারম্যান মো. আশরাফুল ইসলাম আক্কাছ প্রমূখ।
ব্রহ্মপুত্র নদটি সারা বছর পানির অভাবে মৃত থাকে বুক চিরে জেগে ওঠে সুবিশাল চর। কিন্তু বর্ষা কালে এলে অল্প বন্যায় নদের কানায় কানায় ভরে যায়। এ সময় প্রবল ভাঙন দেখা দেয়। পোল্যাকান্দি নামা পাড়া সহ বেশ কিছু এলাকা তীব্র ভাঙ্গন দেখা দেয়। ইতোমধ্যে নদের ভাঙনে বিলীন হয়েছে দ্বীন মাহমুদ, আবদুল খালেক, বিল্লাল হোসেন, আনিছুর রহমান, আমির উদ্দিন,বিল্লাল হোসেন বিল্লু, খুদুমিয়া, রাজু মিয়াসহ বেশ কজনের বসতবাড়ি,ফনলি জমি। নিঃশ্ব হয়ে পড়েছেন ভাঙন কবলীত এলাকার মানুষ।
ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসাবে দেওয়া অন্তত ২০টি ঘর। পূবর্ কাজলা পাড়াআদর্শ গুচ্ছগ্রাম, পোল্যাকান্দি রহমানিয়া দাখিল মাদ্রাসা, পাকা মসজিদ সহ শত শত বিঘা আবাদি জমি। গ্রামবাসীদের দাবী যুগ-যুগ ধরে এ অঞ্চলের ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে বিলিন হচ্ছে। ভাঙন রোধে স্থায়ী কোন প্রদক্ষেপ নেয়া হয়নি। শেষ আশ্রয়টুকু ভেঙে নিলে মাথা গুঁজার ঠাঁই থাকবে না তাদের। এ কারণে দ্রুত ভাঙন রোধের দাবী জানিয়েছেন ভাঙ্গন করলিত এলাকার মানুষ।
এ বিষয়ে জামালপুরের পানিউন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, গত বছর পোল্যাকান্দি নামাপাড়া ব্রহ্মপুত্র ভাঙন রোধে ৩০০ মিটারের একটি প্রকল্প প্রস্তবনা প্রেরণ করা হয়েছে। প্রকল্প্িট অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। অনুমোদন পেলে ভাঙ্গন রোধে ইমার্জেন্সি বালি ভর্তি জিওব্যাগ ফেলা সম্ভব হবে।
ওই গ্রামের বাসিন্দা মো. সমজ উদ্দিন বলেন, ছোট বেলা থেকে দেখছি ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন। আজওঅব্দি ভাঙন রোধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি শেষ বারে এখানে আশ্রয় নিয়েছি সেখানে নদীআবারও ভাঙছে। শেষ আশ্রয় ভেঙে নিলে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবো জানিনা।
পোল্যাকান্দি পূর্বকাজলাপাড়া গুচ্ছ গ্রামের চান্দু মিয়া বলেন, আমাদের কোনো জমিজমা নেই। দীর্ঘ দিন থেকে সরকারি জমিতে (গুচ্ছগ্রামে) বসবাস করছি। দিন মজুরী করে খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছি। শেষ আশ্রয় স্থল এ জায়গাটি ভেঙ্গে গেলে কোথায় গিয়ে আশ্রয় নিবো জানি না। আমিনুল ইসলামের বলেন, পোল্যাকান্দি নামাপাড়ায় ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন শুধুচার থেকে পাঁচশত মিটারেরর মধ্যে প্রবল আকার ধারন করেছে এর মধ্যে অন্তত ২০টি গুচ্ছগ্রাম, পোল্যাকান্দি রহমানিয়া দাখিল মাদ্রাসা, পাকা মসজিদসহ ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স জানান, আমি এর আগেও এ গ্রামে এসেছিলাম। নদী ভাঙনের বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। প্রয়োজনে আবার জানানো হবে। বিষয়টি স্থানীয় সাংসদ সদস্য মহোদয়ের স ুনজরে আছে। আশা করছি ভাঙন রোধে দ্রুত সুফল পাবেন এলাকাবাসী।