জামালপুরের সরিষাবাড়িতে একটি তেতুল গাছকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে তুঘলকি কান্ড। যে কোন সময় ঘটতে পারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। চলছে মিথ্যা মামলা মোকাদ্দমা। ভাড়া করা হচ্ছে সন্ত্রাস বাহিনী। রাম দা লাঠি শোঠা নিয়ে চলছে মহড়া। রাতের অন্ধকারে গাছে পেট্রুল ঢেলে লাগানো হচ্ছে আগুন। এ নিয়ে গ্রামবাসীরা আছে মহা আতংকে।
জানা যায়, জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের মাটিয়াজানী একটি ঘন বসতি পূর্ণ গ্রাম। আজ থেকে প্রায় ৫০/৬০ বছর আগে এ গ্রামের কয়েক জন যুবক উদ্যোগ নিয়ে সরকারী রাস্তার পাশে একটি তেতুল গাছ লাগিয়েছিল। সেই ততুল গাছটি যুগের পর যুগ এই গ্রামের মানুষসহ পথচারীদের দিয়ে আসছে সুশীতল ছাঁয়া। সৌর্ন্দয্য বিরাজ করছে চারদিক। গাছটি কা$াঁর জন্য ওঠে পড়ে লেগেছে ওই গ্রামের সুলতান নামে এক দূর্বৃত্ত। ইতোমধ্যে সে সরকারী রার্স্তা এক পাশের রাস্তা ও ৩০/৩৫টি গাছ কেটেও ফেলেছে। ফলে গ্রামবাসীদের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা ও ক্ষোভের সৃুিষ্ট হয়। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার বিকালে সরিষাবাড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার যান ঘটনা স্থল পরিদর্শনে। গ্রামবাসীরা এই গাছটির নাম দিয়েছেন ”বঙ্গবন্ধু তেতুলতলা চত্বর”। প্রতিদিন এই গাছের ছাঁয়ায় বসে বিশ্রাম করে শত শত নারী পুরুষ শিশু কিশোর আবাল বৃদ্ধ বণিতা। গল্প করে,আড্ডা দেয়। নরম মাটিতে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ে কেউ কেউ।
এই গ্রামেরই বাসিন্দা মৃত আঃ খালেকের ছেলে সুলতান মিয়া সরকারী রাস্তার তেতুল গাছসহ অন্যান্য গাছগুলি নিজের বলে দাবি করে। এরমধ্যে করাতি নিয়ে তেতুল।গাছটি কাটতে গেলে গ্রামবাসীরা বাঁধা দেয়। পরে সুলতান টাকা দিয়ে সন্ত্রাসী ভাড়া করে এনেও গাছটি কাটতে বিফল হয়। এই আক্রোশে সুলতান মিয়া একদিন রাতের অন্ধকারে গাছের গোড়ায় পেট্রুল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিলে গ্রামবাসীরা টের পেয়ে ছুটে গিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলে।
মহাদান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল্লাহ সরিষাবাড়ি ইউএনও শারমিন আক্তারকে সুলতানের শক্তির মূল খুটি কে সেই বিষয়টিও তুলে ধরেন। তিনি বলেন,সুলতান একজন খারাপ চরিত্র ও দূর্বৃত্ত প্রকৃতির লোক। গ্রামের মাঝে ঐ এক ঘর লোকের সাথে সারা গ্রামের লোক পারে না। কোন কিছু হলেই নিজের বাড়িঘরে নিজে ভেঙ্গেচূরে থানায় গিয়ে মিথ্যা মামলা করে এইসব নিরহ গ্রামবাসীকে আসামি করে হয়রানী করে। তার এই শক্তির মূল উৎস্য হলো তার আমেরিকা প্রবাসী বোন খালেদা আক্তার। তিনিই সকল কাজের কাজী।
সুলতানের চাচা শ্বশুর ৮০ বছরের বৃদ্ধা জানান,সুলতান একজন দুষ্ট প্রকৃতির লোক। তার ভাতিজী ও কলেজ পড়-য়া নাতীকে মারপিট করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। দিয়েছে। এর মধ্যে তার ছেলেকে খুন করার জন্য সে ওঠেপড়ে লেগেছে।
এদিকে দূর্বৃত্ত ও সন্ত্রাসী সুলতান মিয়া ও তার মাকে ৩০/৩৫ টি সরকারী রাস্তার গাছ কাঁটা নিয়ে মিথ্যা মামলা করে গ্রামবাসীকে হয়রানী করার কথা জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা কারো বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেনি। ওরা (গ্রামবাসীরা) আমার বাড়িঘর ভাংচূর করেছে সেই কারণে মামলা করেছি। তাছাড়া আমার জমির মধ্যে গাছ। আমি আমার জমির গাছই কেটেছি। অন্য কারো জমি বা সড়কের গাছ কাটিনি। মাফ জোক করার পর যদি দেখা যায় সরকারী গাছ। তা আমি ক্ষতি পূরণ দিব।
মহাদান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান জুয়েল বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে গ্রামবাসীরা ইএনও,ওসি, ডিসি স্যারের কাছে আবেদন করেন। পরে তিনি বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য বিভিন্ন জনকে দায়িত্ব দেন। তার মাঝে আমিও এবজন। আমি নায়েব,সার্ভেয়ার সহেবকে নিয়ে মাফ জোক করে দেখেছি,সড়কে লাগানো গাছ থেকে আরো ৩ ফুট ভিতরে চলে যায় সরকারী রাস্তার জমি। আমাদের এই মাফ সুলতান মিয়া মানেনা।
সরিষাবাড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মবর্তা (ইউএনও) শারমিন আক্তার এলাকায় যাতে আর কোন প্রকার সংঘাতের সৃষ্টি না হয় সে দিকে লক্ষ্য করে পুনরায় এসি-ল্যান্ড,সার্ভেয়ার,নায়েবসহ বিভিন্ন গন্যমান্য ব্যক্তিকে নিয়ে ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেস। পরবর্তীতে মাফ জোক করে তাকে অতি দ্রুত অবহিত করার জন্য নির্দেশ দেন। এরমধ্যে ঊভয় পক্ষকে শান্ত ও ধর্য্য ধরার জন্য নির্দেশ দেন।