চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে এক খামারির ৫টি গরু আগুনে জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা গেছে। অগ্নিকাণ্ডে আরো ২ টি গরুর অবস্হা সংকটাপন্ন। এতে এই খামারির প্রায় ১২ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। গত রোববার দিবাগত রাতে উপজেলার ১১নং ফতেপুর ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ডের হেলাল চৌধুরী পাড়ায় এই ঘটনা ঘটেছে। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কেট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাপ্ত সংবাদ প্রকাশ।
জানা যায়, ফতেপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের হেলাল চৌধুরী পাড়ায় গত রোববার দিবাগত রাতে আবদুল মালেক মানিক (৫৮) নামের এক খামারির ৫ টি গরু আগুনে পুড়ে মারা গেছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছে ওই খামারির আরও ২ টি গরু। এর মধ্যে একটির অবস্থা বেশি সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা। এতে অন্তত ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত ওই খামারি।
খামারি মানিক প্রতিদিনের মতো রাতে গোয়াল ঘরে গরু বেঁধে ঘুমাতে চলে যান। রাত প্রায় ৩ টার দিকে হঠাৎ একটা শব্দ শুনে তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। পরে ঘরের দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে দেখেন তার ঘরের সামনে গোয়াল ঘরের টিনগুলো লালছে বর্ণ ধারন করেছে। বুঝতে পারলেন তার গোয়াল ঘরে আগুন লেগেছে। কিন্তু বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে সৃষ্ট আগুনের লেলিহান শিখা মুহুর্তের মধ্যে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে নিমিষেই সব শেষ করে দিলো তার।
ক্ষতিগ্রস্ত খামারি মানিক আরো জানান, স্থানীয় একটি ব্যাংক থেকে ৫ লাখ টাকা ঋণ ও বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ধার দেনা করে কোরবানি হাটে বিক্রি করার উদ্দেশ্যে গরুগুলো লালন পালন করেছিলাম। পরিকল্পনা ছিলো কোরবানির হাটে গরুগুলো বিক্রি করে সব ঋণ শোধ করবো। আর বসত ঘরের চালটা ঠিক করবো। কিন্তু সেটা আর হলো না। এখন কিভাবে ব্যাংক ঋণের ও বিভিন্ন জনের ধার দেনা শুধ করবো কিছুই মাথায় আসছেনা। আগুন থেকে রক্ষা পেতে হাটহাজারী ফায়ার সার্ভিসের নাম্বারে ফোন করে না পেয়ে জরুরী সেবা ৯৯৯ নাম্বারে কল দিয়ে সাহায্য চাইলে তারা হাটহাজারী ফায়ার সার্ভিসকে খবর জানাচ্ছেন বললেও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে যাননি বলেন তিনি অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে হাটহাজারী ফায়ার সার্ভিস এ- সিভিল ডিফেন্স এর সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবদুল মান্নানের কাছে জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমকে জানান, এ ধরনের কোনো ঘটনার খবর এখনো পর্যন্ত আমাদের কেউ জানাননি। খবর পেলে আমরা অবশ্যই যেতাম, সেবা করাইতো আমাদের কাজ।
সংবাদ পেয়ে ফতেপুর ইউ পি চেয়ারম্যান জায়নুল আবেদিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সুজন কানুনগো জানান, খবর পেয়ে সোমবার সকালে একটি টিম কে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। আসলে গরুগুলো ফ্রিজিয়ান প্রজাতির। আহত দুইটি গরুর মধ্যে একটির অবস্থা সংকটাপন্ন, বাঁচার সম্ভাবনা নাই। বাকী একটি গরুর চিকিৎসা চলছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এবিএম মশিউজ্জামান। এ সময় তিনি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব সাহায্য সহযোগিতা করা হবে বলেও জানিয়েছেন।