নওগাঁর মহাদেবপুরে যুবলীগ নেতা মাসুদুর রহমান মাসুদ উপজেলা চেয়ারম্যান, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আহসান হাবীব ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত ইব্রাহীম বিশ^াসের পুত্রবধূ মার্জিয়া সুলতানা তৃষা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। বুধবার (৫ জুন) ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে এই উপজেলায় সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ শেষে রাত ১০টায় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা আল মামুন তার কার্যালয়ে ফলাফল ঘোষণা করেন।
নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মাসুদুর রহমান মাসুদ আনারস প্রতীকে ৪১ হাজার ৮৫১ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব ভোদনের স্ত্রী আয়েশা বেগম দোয়াত কলম মার্কা প্রতীকে পেয়েছেন ২৭ হাজার ৫ ভোট। এ ছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মন্ডল কাপ পিরিচ প্রতীকে ২০ হাজার ৪৬০ ভোট, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শহীদুল ইসলাম মোটরসাইকেল প্রতীকে ৪৩৪ ভোট, এনজিও কর্মী ওবায়দুল হক বাচ্চু ঘোড়া প্রতীকে ৩৪০ ভোট এবং মহাদেবপুর কৃষি কলেজের অধ্যক্ষ মাইনুল ইসলাম এক সপ্তাহ আগে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়ার পরও কৈ মাছ প্রতীকে ২৪৯ ভোট পেয়েছেন।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব চশমা মার্কা প্রতীকে ২৭ হাজার ৭৪৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি মামুনুর রশিদ বৈদ্যুতিক বাল্ব মার্কা প্রতীকে পেয়েছেন ১৫ হাজার ৫৪৩ ভোট। এ ছাড়া আলমগীর হোসেন টিউবওয়েল মার্কা প্রতীকে ১৫ হাজার ৪৯৪ ভোট, চন্দন কুমার বর্ম্মণ তালা মার্কা প্রতীকে ১১ হাজার ৯৭২ ভোট, তিমথিয় রায় মাইক মার্কা প্রতীকে ১০ হাজার ৯৪৪ ভোট এবং মাহমুদুল ইসলাম নয়ন উড়োজাহাজ মার্কা প্রতীকে পেয়েছেন ৫ হাজার ৮১৮ ভোট।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মার্জিয়া সুলতানা তৃষা হাঁস মার্কা প্রতীকে ৩৮ হাজার ৫৪৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি পরিমিতা মঞ্জুরী মন্ডল লাবনী পদ্মফুল মার্কা প্রতীকে পেয়েছেন ২৩ হাজার ৬৮২ ভোট। এ ছাড়া তাছলিমা খাতুন সেলাই মেশিন প্রতীকে ১৪ হাজার ৪৪০ ভোট, সদ্য সাবেক হওয়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রাবেয়া রহমান পলি কলস মার্কা প্রতীকে ৬ হাজার ৭০২ ভোট এবং নাবিয়া সুলতানা নাইস ফুটবল মার্কা প্রতীকে পেয়েছেন ৪ হাজার ৩১৫ ভোট।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জানান, এদিন উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ৮৪টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হয়। মোট ২ লাখ ৫০ হাজার ৬৬২ জন ভোটারের মধ্যে ৯৪ হাজার ২৮ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ভোট পড়েছে শতকরা ৩৭ দশমিক ৫১ ভাগ। পুরো উপজেলায় শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। ভোটের দিন শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পর্যাপ্ত সংখ্যক থানা পুলিশ, আনসার-ভিডিপি, বিজিবি ছাড়াও ১০টি ইউনিয়নে ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
উল্লেখ্য, এই উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে নির্বাচন হবার কথা ছিল। কিন্তু নির্বাচনের একজন প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব ভোদন সড়ক দূর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২০ মে মারা গেলে নির্বাচন কমিশন পরদিন এখানকার নির্বাচনী সকল কার্যক্রম বাতিল করে চতুর্থ ধাপের সাথে পূণতফসিল ঘোষণা করে।
ঘোষিত ফলাফলে প্রদত্ত ভোটের ১০ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় চেয়ারম্যান প্রার্থী শহীদুল ইসলাম, ওবায়দুল হক বাচ্চু ও প্রার্থীতা প্রত্যাহার করা অধ্যক্ষ মাইনুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম নয়ন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সদ্য সাবেক হওয়া রাবেয়া রহমান পলি ও নাবিয়া সুলতানা নাইস জামানত হারিয়েছেন।