বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উদ্্যাপন অনুষ্ঠানে তরুণ ছাড়াও ধূমপায়ীদের উদ্যেশ্যে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেছেন, জীবনে হতাশা ও চ্যালেঞ্জ থাকতেই পারে। তাইবলে তামাক সেবনকে হতাশা নিরাময়ের উপায় হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না। কারণ, ভবিষ্যতের স্মার্ট বাংলাদেশে বর্তমানের তরুণরাই নেতৃত্ব দেবে।’ ৩১ মে (শুক্রবার) সকাল সাড়ে ৯টায় রাজশাহী বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসন কর্তৃক বিভাগীয় কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকারি চাকুরিতে প্রবেশকালে প্রত্যেক চাকুরিপ্রার্থীকে ডোপটেস্ট করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়াও চাকুরিরত কর্মচারীদের এসিআর প্রতিবেদনে ডোপটেস্ট করানোর বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ধর্মীয় ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকেও যেকোনো ধরণের তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য সেবনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ফলে সবাইকে তামাক সেবন থেকে বিরত থাকারও আহ্বান জানান বিভাগীয় কমিশনার।
‘তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ প্রতিহত করি, শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করি’- প্রতিপাদ্য নিয়ে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানের শুরুতে এক বর্ণাঢ্য র্যালি করা হয়। পরে আলোচনা সভায় আলোচকরা তামাক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আলোচনা করেন।
সভায় বিভাগীয় কমিশনার আরো বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের চারটা ভিত্তি হলো- স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট সমাজ ও স্মার্ট অর্থনীতি; এসবের কোনো স্মার্টের সাথেই কিন্তু ধূমপান জিনিসটি যায় না। এছাড়াও আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ২০৪০ সালের মধ্যেই আমরা ধূমপান থেকে মুক্তি পেতে চাই। মুক্তিলাভের জন্য আমাদের সমন্বিত পদক্ষেপে অগ্রসর হতে হবে।
সভায় বিভাগীয় কমিশনার বলেন, বর্তমানে পৃথিবীতে ১২৫ টি দেশে প্রায় ৪০ লক্ষ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই দরিদ্র দেশ। আর তামাক চাষে বাংলাদেশ বিশ্বের ২০৪টি দেশের মধ্যে ১৩তম। তিনি এমন অবস্থার বিভিন্ন নেতিবাচক দিক তুলে ধরে বলেন, তামাক পাতা শুকানোর জন্য বনভূমি উজাড় করে কাঠ সংগ্রহ করা হয়। এছাড়াও তামাক কোম্পানিগুলো বিজ্ঞাপন, চলচ্চিত্র ও অন্যান্য প্রচার মাধ্যমে তামাক সেবনকে তথাকথিত স্মার্টনেস হিসেবে দেখানোর যে বিপনন কৌশল অবলম্বন করছেন, যা অবিলম্বে বন্ধ করার বিকল্প নেই। এজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব প্রতিরোধে বিদ্যমান ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫’- এর আওতায় তামাক কোম্পানির অপতৎপরতা ও কূটকৌশল রোধে বিভিন্ন অভিযান ও কর্মতৎপরতা অব্যাহত রাখা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে মতবিনিময়কালে তারা কেন ও কীভাবে মাদক সেবনে জড়িয়ে পড়ছে সে বিষয়ে তাদের অভিমত নেন এবং এর থেকে পরিত্রাণের বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে পরামর্শ দেন।
রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মহিনুল হাসান-এর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক মো. পারভেজ রায়হান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আনোয়ার হোসেন ও আবু সালেহ আশরাফুল আলম এবং রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) উপণ্ডপুলিশ কমিশনার (বোয়ালিয়া) বিভূতি ভূষন ব্যানার্জী।
মুক্ত আলোচনায় রাজশাহী প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইদুর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ও নফসের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীবৃন্দ অংশ নেন।