বাগেরহাটের শরণখোলায় ঘূর্ণিঝড় রিমেলের প্রভাবে লন্ডভন্ড হয়েছে। সময় যতো গড়াচ্ছে, ততোই জেগে উঠছে রিমেলের ক্ষতচিহ্ন। হাহাকার শুরু হয়েছে গৃহ ও সহায়-সম্বল হারা মানুষে মাঝে। অনেকের ঘরে খাবার নেই। আবার খাবার থাকলেও অনেকের ঘরে পানি জমে থাকায় রান্নাবান্নার উপায় নেই। গাছ পড়ে সম্পূর্ণ বিদ্ধস্থ ঘরবাড়ির লোকজন অন্যের ঘরে আশ্রয় নিয়েছে। নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুদীপ্ত কুমার সিংহের নেতৃত্বে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ আজমল হোসেন মুক্তা সহ সিপিপির সেচ্ছাসেবক দল সার্বিক সহযোগীতা প্রদান করছে।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে দুর্গত মানুষে দুর্দশা দেখতে ছুটে আসেন বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ শরণখোলা বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি। উপজেলার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ সাউথখালী ইউনিয়নের খুড়িয়াখালী, বগী, গাবতলা, রায়েন্দা ইউনিয়নের রাজেশ্বর, খোন্তাকাট ইউনিয়েনর রাজৈর এলাকায় গিয়ে দুর্গত মানুষের দুর্দশার চিত্র দেখেন এমপি সোহাগ। তিনি ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে তাৎক্ষণিক খাদ্য ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেন। পরবর্তীতে বাস্তুহারাদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিগ্রস্থ রিং বেড়িবাঁধ মেরামতের আশ্বাস দেন।
২৮মে মঙ্গলবার দুর্গত এলাকা পরিদর্শনকালে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন, পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খান, এএসপি এস এম আশিকুর রহমান, শরণখোলা উপজেলা চেয়ারম্যান রায়হান উদ্দিন আকন শান্ত, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুদীপ্ত কুমার সিংহ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমল হোসেন মুক্তা সহ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ তার সঙ্গে ছিলেন। শরণখোলা পরিদর্শন শেষে এমপি বদিউজ্জামান সোহাগ মোরেলগঞ্জ উপজেলার ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় যান।
বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. হেমায়েত উদ্দিন ভূইয়ার নেতৃত্বে একটি টিম বুধবার শরণখোলার ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শণে আসেন। এ সময় বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শণ কালে তার সাথে ছিলেন শরণখোলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রায়হান উদ্দীন শান্ত, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিলনসহ এলাকার দলীয় নেতৃবৃন্দ।
গত ২৬ মে বিকাল থেকে আবহাওয়া পরিবর্তন হতে শুরু করলে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে ইউপি চেয়ারম্যান, সিপিপির টিম জানমালের নিরাপত্তা দিতে আশ্রয়কেন্দ্রে আসার জন্য সিপিপির উপজেলা টিমলিডার মাহবুবুর রহমান মিন্টু, ইউনিয়ন টিম লিডার অহিদুজ্জামান ডালিম মাইকিংসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। রাত থেকে শুরু করে পরের দিন দুপুর পর্যন্ত তান্ডব চালায় ঘূর্ণিঝড় রিমেল। এ তান্ডতে হাজার হাজার বাড়িঘর সম্পূর্ণ ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। অসংখ্য গাছপালা উপড়ে পড়ে রাস্তাঘাট যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সহ কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হয়। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ। বিদ্যুৎ লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়। বিদ্যুৎ বিভাগের প্রচেষ্টায় বুধবার সকালে উপজেলা সদরে প্রায় ৭০ ঘন্টা পর বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে সক্ষম হয়। মঠবাড়িয়া-শরণখোলা বলেশ্বর নদীর উপজেলা সদর রায়েন্দা ফেরী ঘাটের সংযোগ সড়ক ঢেউয়ের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় ফেরী যোগাযোগ এখনও বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
সাউথখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ ইমরান হোসেন রাজিব বলেন, ঝড় বণ্যা হলে আমার ইউনিয়নের মানুষের দূর্ভোগের সীমা থাকে না। ক্ষতিগ্রস্থ তিনশতাধিক পরিবার বেড়ীবাধ ও অন্যান্য এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে।