বেকারত্বের অভিশাপ দূর করে ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে বিদেশ গিয়ে দালালের খপ্পরে পরে সর্বশান্ত হয়ে শুন্য হাতে দেশে ফিরে চরম হতাশায় ভূগছিলেন ওমান ও সিঙ্গাপুর ফেরত দুই যুবক। তাদের দুইজনের বাড়ি জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলায়।
হতাশাগ্রস্ত ওই দুই যুবককে বেঁচে থেকে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন ব্র্যাকের মাইগ্রেশন কর্মসূচি। ওই কর্মসূচির আওতায় দুই যুবককে বিনামূল্যে গবাদী পশু ও মৎস্য চাষের জন্য মাছের পোনা এবং তা প্রতিপালনের জন্য বিন্যামূল্যে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এসব সহায়তা পেয়ে বিদেশ ফেরত যুবকরা এখন বেকার নামের অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন।
সূত্রমতে, আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার গ্রামের সোনামদ্দিন ফকিরের ছেলে ওমান ফেরত সুরুজ ফকিরকে মৎস্য ঘেরে চাষের জন্য ৬৫ হাজার টাকার মাছের পোনা ও ১৬ হাজার টাকার মাছের খাবার দেওয়া হয়েছে। রোববার সকালে সুরুজ ফকির জানান, বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়ে এক বুক স্বপ্ন নিয়ে ধারদেনা করে ২০২৩ সালে সাড়ে তিন লাখ টাকার বিনিময়ে সে ওমান গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে দালাল তাকে কোন কাজ দেয়নি। খেয়ে না খেয়ে আড়াই মাস দুঃসহ জীবন যন্ত্রনা ভোগ করার পর দেশ থেকে টাকা পাঠানোর পর বিমানের টিকেট ক্রয় করে সে শুন্য হাতে দেশে ফিরে এসেছেন। বর্তমানে নিঃস্ব সুরুজ ব্র্যাকের সহায়তায় আবার ঘুরে দাড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন।
বাশাইল গ্রামের লালচান বেপারীর ছেলে মিলন বেপারী জানান, সাড়ে আট লাখ টাকার বিনিময়ে সে সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন। ২৪ দিন তিনি সিঙ্গাপুরে ছিলেন। এই সময়ের মধ্যে দালাল তাকে কোন কাজ না দিয়ে ফেলে রেখে চলে যায়। পরবর্তীতে অন্যের সহায়তায় একবছর আগে খালি হাতে সে দেশে ফিরে চরম হতাশাগ্রস্ত হয়ে পরেন। এরইমধ্যে গত ১৫ মে সকালে ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের আওতায় তাকে ৬৫ হাজার টাকা মূল্যের গবাদী পশু ও তা প্রতিপালনের জন্য ১২ হাজার টাকার খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে নতুন করে ঘুরে দাঁড়িয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছেন মিলন।
ব্র্যাকের বরিশাল আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক (দাবী-১) মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, বিদেশগামী সকলকে ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের আওতায় তাদের ভিসা চেক করে কোম্পানীর কাজের নিশ্চয়তা জেনে বিদেশে যাওয়ার জন্য ব্যাপক প্রচার-প্রচারনা চালানো হচ্ছে। দালালের খপ্পরে পরে যারা ভিসা চেক না করেই বিদেশে যাচ্ছেন তাদের অধিকাংশরাই প্রতারনার স্বীকার হয়ে শুন্য হাতে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন। ব্র্যাকের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক (দাবী-২) পাপড়ী বাড়ৈ বলেন, বিদেশ ফেরত যুবকদের স্বাবলম্বী করতে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে মাইগ্রেশন কর্মসূচির মাধ্যমে সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। সহায়তাপ্রাপ্তদের ব্র্যাকের কর্মকর্তারা ফলোআপ করবেন।