চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের আগামী ২১ মে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান পূরুষ / মহিলা পদে ত্রিমুখী লড়াই আবাস পাওয়া যাচ্ছে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পূরুষ / মহিলা পদে ৪ জন করে প্রার্থী রয়েছে।
চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি এস এম রাশেদুল আলম। তিনি বিগত নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বদ্ধিতায় চির্বাচিত হয়েছিল দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে। সব রাজনৈতিক দলের অংশ গ্রহনমুলক নির্বাচনের জন্য এবার সরকারি সিদ্ধান্ত অনুসারে দলীয় প্রতীক ছাড়া নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাই এবার দলীয় প্রতীক ছাড়া অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন। তাঁর প্রত্যাশা তিনি দীর্ঘ পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন করছেন সততা ও নিষ্টার সাথে। এবার ও তিনি নির্বাচিত হয়ে মানুষের জন্য কাজ করবেন। তার সাথে আওয়ামী যুবলীগ ছাড়াও মুল দল, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীরা তার সাথে থেকে কাজ করছেন। উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইউনুস গনি চৌধুরী বিগত সময়ে ও একবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করেছেন। সেই সময় বিজিত হয়ে ও তিনি স্হানীয় সাংসদের সাথে থেকে মানুষের জন্য কাজ করছন। এবার তিনি আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। তাঁর সাথে ও আওয়ামী লীগ, অঙ্গও সহযোগী সংগঠনের একটি অংশ নির্বাচনের জন্য কাজ করছেন। অপরদিকে সোহরাব হোসেন চৌধুরী নোমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
তিনি এবার প্রথম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করছেন ঘোড়া প্রতীক নিয়ে। উপজেলার আওতাধীন প্রত্যেক ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড এবং পৌরসভার কমিটি ও ওয়ার্ড কমিটির আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীরা তাঁর সাথে থেকে নির্বাচনের জন্য কাজ করছেন। তাই তিনি নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার আশাবাদী। কারণ তিনি দলের দুর্দিনে দলের সাথে ছিলেন। চেয়ারম্যানপদে নিবার্চনে তিন জনই শক্তিশালী প্রার্থী। তাই নির্বাচনে ত্রিমুখী লড়াইয়ের আবাস পাওয়া যাচ্ছে।
পূরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে এম এ খালেদ চৌধুরী। প্রতীক বৈদ্যুতিক বাল্ব। এবং নূরুল আবসার। প্রতীক চশমা। পূর্বে ও তারা একই পদে নির্বাচন করে বিজিত হয়েছেন। এরপর ও কিন্তু তাঁরা হাল না ছেড়ে মানুষের পাশে থেকে কাজ করেছেন। এই পদে নতুন দুই প্রার্থী রয়েছে একজন মাস্টার আশোক কুমার নাথ। তাঁর প্রতীক তালা। তিনি দীর্ঘদিন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। প্রধান শিক্ষক হিসাবে পদোন্নতি নিয়ে তিনি অবসর গ্রহন করে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। শিক্ষক হিসেবে তাঁর যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। তাছাড়া তিনি আন্তর্জাতিক সংগঠন লায়ন ক্লাবের সাথে থেকে মানুষের কল্যাণেকাজ করছেন। মোঃ আশরাফ উদ্দীন জীবন। তাঁর প্রতীক টিউবওয়েল। তাঁর মরহুম পিতার এলাকায় সুনাম রয়েছে। ভাইস চেয়ারম্যান পদে উল্লিখিত দুই জনের বাড়ি মেখল ইউনিয়ন।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিবি ফাতেমা শিল্পী। প্রতীক প্রজাপতি। তিনি গুমানমর্দ্দন ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে বিনা প্রতিদ্বন্ধীতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। ইতোমধ্যে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বচন করতে তিনি পদত্যাগ করেছেন। বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মোক্তার বেগম মুক্তা কলসি প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। তিনি দায়িত্ব পালন কালে উপজেলার আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় কাজ করে সুনাম অর্জন করেছেন সাজেদা বেগম পূর্বে উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে পাঁচ বছর সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর একটা সুনাম সর্বত্র রয়েছে। এবার তিনি ফুটবল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন। শারমিন ইকবাল পূর্বে ও একবার একই পদে নির্বাচন করেছেন। এবার তাঁর প্রতীত হাঁস। তিনি উপজেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান হিসাবে নারী উন্নয়নের জন্য ব্যাপক কাজ করছেন।
চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান পূরুষ ও মহিলা পদে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাঁরা প্রত্যেকে আওয়ামী ঘরনার প্রার্থী। অন্যকোন রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় প্রতিদ্বন্ধীতা হবে নিজেদের মধ্যে। হাটহাজারীর উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধী কোন প্রার্থী নির্বাচন প্রভাব বিস্তার করতে চাইলে সংঘাতের আশঙ্কা প্রকাশ করছেন পর্যবেক্ষক মহল। তবে নির্বাচনে প্রশাসন সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থেকে অবাদ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ভাবে কাজ করবে বলে উল্লেখ করেছেন প্রকাশ না করার শর্তে প্রশাসনের একটি সূত্র গনমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপজেলার আওতাধীন ১৪টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভায় মোট ভোটার ৩ লক্ষ, ৫৭ হাজার, ৪ শ ৪৮ জন। এরমধ্যে পূরুষ ভোটার ১ লক্ষ ৮৬ হাজার ৬শ ৪৩ জন মহিলা ভোটার১লক্ষ ৭০ হাজার ৮ শ ৫ জন।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ৩ জনই দক্ষিণ হাটহাজারীর। উত্তর হাটহাজারী এলাকার ভোট যার পক্ষে বেশি যাবে তিনিই বিজয়ী হতে পারবে বলে স্হানীয়রা ধারনা করছেন। তবে তিন প্রার্থীরই কর্মী সমর্থক উত্তর এলাকায় রয়েছে। ভাইস চেয়ারম্যান পূরুষ / মহিলা পদে উত্তর হাটহাজারীর মাত্র দুই জন প্রার্থী রয়েছে। এবারের নির্বাচন ১১ নং ফতেপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে একজন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুইজন এবং পূরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে একজন প্রার্থী প্রতিদ্বদ্ধীতা করছে। ৮ নং মেখল ইউনিয়ন ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুই জন প্রার্থী রয়েছে। চেয়ারম্যান পদে উত্তর মার্দাশা ইউনিয়নের একজন, শিকারপুর ইউনিয়নের একজন প্রার্থী রয়েছে। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দক্ষিণ মাদার্শা ইউনিয়নের একজন, ৪নং গুমানমর্দ্দন ইউনিয়নের একজন প্রার্থী রয়েছে। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বদ্ধীতা কারীরা এখন প্রচারনায় ব্যস্ত দিন কাটাচ্ছে। পোস্টার ব্যানারে ছেয়ে গেছে পুরা নির্বাচনী এলাকা। ভোট ও জনবহুল কেন্দ্রের আশেপাশের অনেক প্রার্থী নিজের অফিস করে রেখেছে আগেভাগে। অফিসে নিজ নিজ কর্মী সমর্থকের বসে প্রচার প্রচারনা করছে। বলতে গেলে হাটহাজারীতে এখন নির্বাচনী উৎসব চলছে। আগামী ২১ মে প্রমানিত হবে কারভাগ্যে বিজয়ের মালা আসে।