সিলেটের জৈন্তাপুরে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে চার ছাত্রলীগ কর্মীর মৃত্যুর জেরে হাসপাতাল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৩০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. সালাহ্উদ্দিন মিয়া বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলায় ২৫০ থেকে ৩০০ অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। রোববার দুপুরে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তাজুল ইসলাম। এদিকে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত এবং হাসপাতালে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে তিন সদস্যের একটি এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ৫ সদস্যের পৃথক আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে গঠিত তদন্ত কমিটিতে অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. শামিউল ইসলামকে প্রধান হিসেবে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের কমিটিতে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরুল হাসানকে প্রধান করা হয়েছে। কমিটিতে সিলেট বিআরটিএর সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজুল ইসলাম, সিলেট জেলা পুলিশের একজন সদস্য, সিভিল সার্জনের একজন সদস্য এবং ফায়ার সার্ভিসের একজন সদস্যকে রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট বিআরটিএর সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজুল ইসলাম। অপরদিকে সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন নিহতের ঘটনায় ছাত্রলীগ কর্মী নেহাল পালের বাবা রনদিপ পাল বাদী হয়ে গত শনিবার রাতে জৈন্তাপুর থানায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছেন। এর আগে শুক্রবার রাত ১২টার দিকে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের জৈন্তাপুরের ৪ নম্বর বাংলাবাজার রাংপানি এলাকায় প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে নিহত হন চার যুবক। নিহতরা হলেন- জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের লামাপাড় গ্রামের জুবায়ের আহসান, পানিহারাহাটি গ্রামের মেহেদী হাসান, জাঙ্গালহাটি গ্রামের আলী হোসেন ও তোয়াসীহাটি গ্রামের নেহাল পাল। তারা সকলেই উপজেলা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত পৌনে ১২টার দিকে দুর্ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়রা হতাহতদের উদ্ধার করে রাত ১টার দিকে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এ সময় হাসপাতালের চিকিৎসকদের অবহেলা ও অ্যাম্বুলেন্স না দেওয়ার অভিযোগে হাসপাতালে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন স্থানীয়রা। এ সময় হাসপাতালে পার্কিং রাখা সরকারি জিপে আগুন ও অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তাজুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনা এবং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভাঙচুরের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভাঙচুরের ঘটনায় তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।