রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার নন্দীগ্রাম আলিম মাদ্রাসায় শিক্ষক কর্মচারী রয়েছে ২৪ জন। আর শিক্ষার্থী রয়েছে মাত্র ৭ জনের বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ থেকে শুরু করে শিক্ষক কর্মচারীরা সবাই নিয়মিত বেতন ভাতা পেয়ে থাকেন। বুধবার (২৫ অক্টোবর) মাদ্রাসায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গিয়েছে,কোনো ছাত্রছাত্রী উপস্থিত ছিলেন না। মাদ্রাসায় ২২ জন শিক্ষক আর ২ জন কর্মচারী রয়েছে। আর কয়েক জনের বেতন ভাতা হতে বাকি রয়েছে। শিক্ষকরা হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে নিজ নিজ কর্মস্থল ত্যাগ করচ্ছেন। মাদ্রাসার পাশের চায়ের দোকানদার সাইদুর রহমান এবং মাদ্রাসার সঙ্গে থাকা বাড়িআলা আবদুল রাজ্জাক হোসেন বলেন,প্রতিদিন নিয়মিত শিক্ষার্থী মাত্র পাচঁছয় জনের মতো হতে পারে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আজাদ রহমান বলেন,শুধুমাত্র অধ্যক্ষের কারণে এই প্রতিষ্ঠানটি চোখের সামনে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় এলাকাবাসীরা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে,তার নামে মামলা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। উপজেলার চেয়ারম্যান,সাবেক ইউএনওর বিরুদ্ধে পর্যন্ত মামলা করা হয়েছে। মাদ্রাসাটি শুরুর দিকে ব্যাপক ছাত্রছাত্রী ছিল। বর্তমানে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবু মুসা এলাকার সূধী ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে নিজেই সবকিছু করেছেন। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষকরা কথা বললে, তাদের বেতন ভাতা বন্ধ করে দেওয়ার নজির আছে। মাদ্রাসার সাবেক ছাত্র আজমত আলী বলেন,এখানে আমি পড়াশোনা করেছি। কোনোদিন দেখিনি সরকারি কোনো দিবস পালন করতে। এখানে প্রায় ৭ জনের মতো ছাত্রছাত্রী রয়েছে। অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে ভাড়া করে এনে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া হয়ে থাকে। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ স্যারের জন্য এলাকাবাসী তার ওপর ঘৃনা করে ছেলেমেয়েদের মাদ্রাসাতে পড়াশুনা করান না। এমনকি বর্তমানে শিক্ষার্থীর চেয়ে শিক্ষক কর্মচারী বেশি রয়েছে এই মাদ্রাসায়। মাদ্রসার সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে ২৪ জনের মতো শিক্ষক কর্মচারী রয়েছে। আমি শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে একটি অভিযোগ দিয়ে ছিলাম। তার সুফল এখনো দেখতে পায়নি। শিক্ষকরা সবাই অধ্যক্ষ আবু মুসার ভয়ে আতঙ্কে থাকে। সে ডিজির প্রতিনিধির স্বাক্ষর জালিয়াতি করে শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন। এতে করে একজনের বেতন হলেও,অন্য আরেকজনের বেতন এখনো হয়নি। আলমগীর নামের ব্যক্তিকে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বেশ কয়েক লাখ টাকা নিয়ে রেখেছেন। খাতা কলমে যে কয়জন শিক্ষার্থী আছে। তারা মাঝেমধ্যে মাদ্রাসায় এসে উপস্থিত খাতায় স্বাক্ষর করে যায়। নিয়মিত শিক্ষার্থীর উপস্থিতি মাত্র ছয় হতে সাত জনের বেশি হবে না। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহীদুল হক বলেন, তিনি একজন মামলা বাজ ব্যক্তি। তার ভেতরে কোনো ভদ্রতা নেই। তার বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ রয়েছে। আমরা শিক্ষা অধিদপ্তরে রিপোর্ট পাঠিয়েছি। শিক্ষার্থীর নাই, তবুও কিভাবে বেতন ভাতা পাচ্ছেন এটা আমার জানা নেই। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবু মুসাকে প্রশ্ন করা হয়। মাদ্রাসা এলাকার মানুষ আপনার বিরুদ্ধে কেন কথা বলছে। তিনি বলেন,তাদেরকে বলেন বলে ফোনের লাইন কেটে দেয়। এ ব্যাপারে দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল করিম বলেন, আমি নতুন এসেছি। আমার নিকট কেউ এখনো পর্যন্ত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।