কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয়ে এক সপ্তাহের ব্যবধানে একই খামারের ৯টি গরুর মৃত্যু হয়েছে। গত সোমবার থেকে শনিবার পর্যন্ত উপজেলার পাটুয়াভাংগা ইউনিয়নের ভিটিপাড়া গ্রামের জারিন এ- জারিফ এগ্রো ফার্মে এই ঘটনাটি ঘটে। উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা গরুর খামারটি পরিদর্শন করেছেন। নিয়মিত ওষুধ প্রয়োগ করেও কোন কাজ হয়নি বলে জানান খামারের কর্মচারীরা।
সরেজমিনে উপজেলার পাটুয়াভাঙ্গা ইউনিয়নের ভিটিপাড়া গ্রামের এগ্রো ফার্মটি পরদর্শন করে জানা যায়, এখনও খামারে ১৩টি গাভী রয়েছে। সবগুলোই জ্বরে আক্রান্ত। দায়িত্বরত কর্মচারীরা নিয়মিত ওষুধ প্রয়োগসহ বিভিন্ন পরিচর্যা করে যাচ্ছেন। এ সময় পাসেই নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন খামারীর মালিক মাজহারুল ইসলাম ফারুক। তিনি ভালভাবে কথাও বলতে পারছিলেন না। কিছু জানতে চাইলে তিনি হাওমাও করে কেঁদে কেঁদে বলতে থাকেন আমার সব শেষ হয়ে গেছে। আমার সারা জীবনের স্বপ্ন ভেংগে চুরমার হয়ে গেছে। চোখের সামনে একে একে ৯টি গরুর মৃত্যু হয়েছে। আমি কিছুই করতে পারলামনা। বাকি গরু গুলোর অবস্থাও আশংকাজনক। মুখে খাবার খেতে পারছেনা। মুখের দুপাস ক্ষত হয়ে লালা পড়ছে। নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ দিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু কোন কাজে আসছে না।
খামারীর মালিক মাজহারুল ইসলাম ফারুক জানান, ২০১৬ সালে ৪ টি ফ্রিজিয়াম জাতের গাভী দিয়ে উপজেলার ভিটিপাড়া গ্রামে জারিন এ- জারিফ এগ্রো ফার্ম চালু করেন। উদ্যোক্তা হিসাবে ১টি ২টি করে বাড়িয়ে ছোট বড় ২২টি গরুতে রুপান্তর করেন তিনি। তন্মধ্যে ১৩টি গাভী দুধ দহনের উপযুক্ত ছিল। প্রতিদিন গড়ে ১৫০ লিটার দুধ বিক্রি করেন তিনি। দুধ বিক্রয়ের টাকা দিয়ে গাভীগুলোর খাবার এবং শ্রমিকদের বেতন দিয়ে থাকেন। খমারী মালিক ফারুক আরও বলেন, খামারটি নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। কিন্তু হটাৎ ক্ষুরা রোগে গরু গুলো আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এতে আমার ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়ে গেল। বাকীগুলোও শংকামুক্ত নয়। নিমিষেই আমার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। নতুন করে ঘুড়ে দাঁড়াতে পারব কিনা জানিনা। উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, একটি গরুর ফার্মে গরু মারা যাওয়ার খবরে ঘটনাস্থলে আমি সহ জেলা থেকে ডাক্তার টিম নিয়ে পরিদর্শন করি। ক্ষুরা রোগে এতগুলো গরু একসাথে মারা যাবে এটা নাও হতে পারে। কারণ ক্ষুরা রোগের ভেকসিন গরু গুলোকে দেয়া হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে ধারনা করছি ফুড পয়জনিং থেকেও এটা হতে পারে। তাই মৃত গরু গুলোর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসলে জানা যাবে ঠিক কি কারণে গরু গুলোর মৃত্যু হয়েছে।