মেঘনা নদীর তীরবর্তী মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের বিচ্ছিন্ন চরবলাকী ও ভাটি বলাকী দুটি গ্রাম। এ দুটি গ্রামের দু’পাড়ে মাঝে রয়েছে একটি সংযোগ খাল। আর এই খাল পার হওয়ার স্থলে রয়েছে কাঁঠ ও বাঁশের তৈরি সাঁকো। দুটি গ্রামের মানুষের আজও ভরসা কাঠ ও বাঁশের একটি সাঁকো।
সরজমিনে দেখা যায়, খালের ওপর সেতু না থাকায় অসুস্থ নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, দিনমজুর, কৃষকদের ভোগান্তির শেষ নেই। খালের উপর কাঠ ও বাঁশ দিয়ে তৈরি সাঁকো দিয়ে মানুষকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয়। বর্তমানে সাঁকোটির অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
স্থানীয়রা বলছেন, শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হলেও বর্ষাকালে বাড়ে ভোগান্তি। অনেক সময় সাঁকো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। ভেসে যাওয়ার উপক্রম হয়। তখন খাল পারাপারে নৌকাই একমাত্র মাধ্যম হয়ে ওঠে। বর্ষা ও বন্যার সময় নৌকা দিয়ে ঝুঁঁকিপূর্ণ চলাচল করতে গিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটে। ভেসে যাওয়ার উপক্রম হয়। তখন খাল পারাপারে নৌকাই একমাত্র মাধ্যম হয়ে ওঠে। স্থানীয়রা সাঁকোটির স্থলে ব্রীজ তৈরি দাবি জানিয়েছে।
চরবলাকী গ্রামের রহমতুল্লাহ মিয়া জানান, জনপ্রতিনিধিদের পরিবর্তন হলেও হয়নি সাঁকোর পরিবর্তন। ছোট বেলা থেকে এ সাঁকোটি দেখে আসছি। এখন ৭০ বছর বয়স সাঁকোটি সাঁকোই রয়ে গেলো। কোন পরিবর্তন হয়নি। বৃদ্ধ ও শিশুদের মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয়। কয়েকজন দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়েছে। স্কুলে ছেলে মেয়েদের পাঠিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হয় তাদের।
খেয়াঘাটের প্রবীণ মাঝি মোতালেব সরকার (৫৫) বলেন, ‘সরকার কত কিছু করে, আমাদের এ খালে একটি সেতু বানাতে পারে না। একটি সেতুর জন্য আমাদের দুই গ্রামের শতশত মানুষের কষ্ট নিত্য দিনের সাথী।
ভাটি বলাকী গ্রামের বৃদ্ধ কাশেম মিয়া বলেন, খালে সেতু না থাকায় ধান, পাট, চাল, শাকসবজি বাজারে নিয়া বিক্রি করা মুশকিল। বাধ্য হয়ে কম দামত জিনিসপত্র বেচতে হয়।
সাইফুল ইসলাম জানান,স্বাধীনতার পর থেকেই এই খালের ওপর সেতু হবে হচ্ছে বলে আশায় বুক বেঁধে আছে এ গ্রামে হাজার হাজার মানুষ। সেতুর অভাবে মানুষজন অনেক কষ্ট করে নদী পার হয়।অনেক সময়ই দুর্ঘটনা ঘটে। মানুষের এই দুর্ভোগ লাঘবে অনতিবিলম্বে একটি সেতু নির্মাণ করা প্রয়োজন।
হোসেন্দী ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য নবি হোসেন সরকার বলেন, খালের উপর একটি সেতু নির্মিত হলে অবহেলিত এই এলাকায় পরিবর্তন আসবে। মানুষের আয় উন্নতি বাড়ছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশুদের যাওয়া-আসাও বাড়বে। এই সেতু নির্মাণ হলে হাজার হাজার মানুষ উপকৃত হবে।
এ বিষয়ে হোসেন্দী ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠু বলেন, দুটি গ্রামের সংযোগ খালের সাঁকোটিতে সংস্কারের জন্য পরিষদ থেকে দু’বার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ওখানে ব্রীজ নির্মাণের জন্য উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে।