ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা খাদ্য গুদামে প্রায় সোয়া ২শ’ মে.টন চাল ঘাটতির অভিযোগে গুদামটি সিলগালা করেছেন সংশ্লিষ্টরা। গত বুধবার বিকেলে ঢাকা বিভাগীয় আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ মাহবুবুর রহমান, ফরিদপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ তারিকুজ্জামান, মাদারীপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ ইসমাইল হোসেন ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) রেজাউল আলম উপস্থিত থেকে গুদামের নথিপত্র যাচাই পূর্বক সিলগালা করেন।
অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা খাদ্য গুদামের ওসিএলএসডি সানোয়ার হোসেন প্রায় সোয়া ২শ’ মে.টন চাল আত্মসাত করার পর গত চার মাস ধরে ইউনিয়ন পরিষদের ভিজিডি কার্ডের চাল ও ডিলারদের ১৫ টাকা কার্ডের চাল সরবরাহ বন্ধ করে দেন। এতে উপজেলার হত দরিদ্ররা দীর্ঘদিন ধরে সরকারি খাদ্য সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতনরা গুদামের নথিপত্র যাচাই করতে গিয়ে সরকারি চাল আত্মসাতের ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ তারিকুজ্জামান বলেন, “বিষয়টি আসলে কেঁচো খুড়তে সাপ বেড়িয়ে আসার মত ঘটনা। গুদামের নথিপত্র যাচাই করতে গিয়ে আমরা অনেক গড়মিল পাই। যাচাইয়ান্তে একপর্যায়ে বড় অংকের চাল আত্মসাতের ঘটনা বেড়িয়ে আসে। তিনি আরও জানান, গুদামের চাল আত্মসাতের ব্যাপারে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে না পাওয়া পর্য়ন্ত স্পষ্ট কিছু বলা যাবে না”। একই দিন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) রেজাউল আলম বলেন, “ আপাতত গুদামটি সিলগালা করে রাখা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে”।
এ ঘটনার পর উপজেলা ওসিএলএসডি’র গাঁ ঢাকা দিয়ে রয়েছেন বলে জানা গেছে। গত ক’য়েক দিন ধরে কয়েক দফায় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে গিয়ে তাকে পওয়া যায় নাই। মুঠোফোনে তার সাথে বহুবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করার পরও তিনি ফোন রিসিপ করেন নাই। বৃহস্পতিবার বিকেলে শুধু একবার ফোনটি রিসিপ করে বলেন, “ ভাই আমি অসুস্থ্য, পড়ে কথা বলবো”। একই দিন উপজেলা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাদ খান জানান, “ ওই ওসিএলএসডি গত চার মাস ধরে আমার ইউনিয়নের প্রায় ৮০ মে.টন চাল সরবরাহ করে নাই। একইভাবে উপজেলার চার ইউনিয়নের প্রায় ২শ’ মে.টন. ভিজিডি কার্ডের চাল সে আত্মসাত করে রেখেছে। আমি গত বুধবার রাতে ওসিএলএসডি’র নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি” ”। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৫ টাকা কার্ডের এক ডিলার জানায়, “ উপজেলার সাতজন ডিলারের মধ্যে নিদির্ষ্ট এক ডিলারের সাথে আঁতাত করে ওই ওসিএলএসডি প্রায় কোটি টাকার চাল আত্মসাত করে রুকিয়ে আছেন।”। উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানজিলা কবির ত্রপা জানায়, “ খাদ্য গুদাম সিলগালার ব্যাপারে এখনো আমার কাছে কোনো চিঠি আসে নাই”।