ভোটের আর মাত্র ১দিন বাকি। ভোট হবে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। আগামীকাল বুধবার (২ নভেম্বর) ভোটকে ঘিরে বইছে উৎসবের আমেজ। ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে পৌর এলাকার অলিগলি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে প্রচার-প্রচারণা। উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে এই প্রথম ইভিএমের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের অংশ হিসেবে ১১ বছর ৯ মাস ৫ দিন দীর্ঘ পর পার্বতীপুর পৌরসভা নির্বাচন হতে যাচ্ছে। ১৯৭২ সালে গড়ে উঠা পার্বতীপুর পৌরসভা ২০১৪ সালে ২৯ সেপ্টেম্বর প্রথম শ্রেনির পৌরসভার মর্যাদা পায়। ২০১১ সালের ২৭ জানুয়ারী পার্বতীপুর পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এবার ২ জন প্রার্থী মেয়র পদে প্রতিদ্বিতা করছেন। সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিল ১৮ ও সাধারন কাউন্সিল পদে ৪২ জন প্রার্থী লড়ছেন। নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনীত নৌকা প্রতীক মেয়র প্রার্থী মো. আমজাদ হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন নারকেল গাছ প্রতীক নিয়ে উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এ.জেড.এম মেনহাজুল হক। এছাড়াও সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীরা বিরামহীন ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। প্রচারণার দিক থেকে এ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের চেয়ে তিনি বেশ এগিয়ে রয়েছেন নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী জননেতা আমজাদ হোসেন। চালিয়ে যাচ্ছেন কর্মী সভা, পথসভা ও উঠান বৈঠক। তাঁর প্রচারণায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিচ্ছে এলাকার লোকজনও।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নৌকার মার্কা নিয়ে পৌর এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ড ঘুরে ঘুরে ভোট চাইছেন। নির্বাচনী মাঠে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তিনি। উপজেলার ক্রীড়া সংগঠক, শিক্ষক, শ্রমিক, ভ্যানচালক ও ব্যবসায়ীরা আলাদাভাবে নৌকা মার্কার সমর্থনে প্রচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। পৌর এলাকার প্রতিটি মহল্লার বাড়ি বাড়ি অলিগলি, সড়ক পথে নৌকা মার্কার পোস্টার, ব্যানারে ছেঁয়ে গেছে। চায়ের দোকান, মুদি দোকান, হোটেল ও স্ট্যান্ডে ভোটারদের মুখে মুখে নৌকা মার্কার প্রার্থীর নাম আলোচনায় মুখোর হচ্ছে।
পৌরসভার ভোটার খেলোয়াড় ও কলেজ শিক্ষক কামরুল হক কামু বলেন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় পৌরসভায় এখন পর্যন্ত তেমন কোনো উন্নয়ন কাজ হয়নি। তিনি বলেন, আমরা এমন একজন মেয়র চাই যিনি পৌরসভার উন্নয়ন এবং নাগরিক সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে দিনরাত পরিশ্রম করবেন।
পার্বতীপুর পৌর নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ শাহিনুর ইসলাম প্রামাণিক বলেন, এবারের নির্বাচনে পৌরসভার ৯ ওয়ার্ডের ৩৩ হাজার ৩’শ ৯৯ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। এর মধ্যে মহিলা ভোটার ১৬ হাজার ৯শ’ ২৬ ও পুরুষ ভোটার ১৬ হাজার ৪শ’ ৭০ জন। পৌরসভায় ১৩টি ভোট কেন্দ্রে ১০৮টি বুথে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন অবাদ সুষ্ঠ করতে জেলা নির্বাচন কমিশন সবধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের দিন ভোটাররা নির্বিঘ্নে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
পৌর প্রশাসক ও পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ ইসমাঈল বলেন, আগামী ২ নভেম্বর পার্বতীপুর পৌরসভায় সুন্দর, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, গত ২০ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের (ইসি) উপণ্ডসচিব মো: আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে দিনাজপুরের পার্বতীপুর পৌরসভাসহ, চট্রগ্রামের ফটিকছড়ি, সিলেটের বিশ্বানাথ ও জামালপুর মেলান্দহ হাজরাবাড়ী পৌরসভা নির্বাচনের এ তফসিল ঘোষনা করেন।