
১৯৩৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে স্পেনের ক্ষমতায় বসে একটি বামপন্থী সরকার। সঙ্গত কারণেই কমিউনিস্ট ও সমাজতন্ত্রীদের সমর্থনপুষ্ট সরকার রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে রোমান ক্যাথলিক গির্জার ব্যাপক হস্তক্ষেপের বিরোধিতা শুরু করে। সেনাবাহিনী এবং ডানপন্থী দলগুলো গির্জাকে সমর্থন করায় শুরু হয় উত্তেজনা, রাজনৈতিক অস্থিরতা।
১৯৩৬ সালের ১৭ জুলাই এক বিদ্রোহের সূচনা করেন মরক্কোর সামরিক কর্মকর্তারা, যা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে স্পেনের মূল ভূখ-ে। বিদ্রোহীদের নেতৃত্ব দেন জেনারেল ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কো নামের সিনিয়র এক কর্মকর্তা। অক্টোবরে ফ্রাঙ্কো নিজেকে স্পেনের রাষ্ট্রপ্রধান ঘোষণা করলে শুরু হয়ে যায় রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ। গির্জা বিদ্রোহীদের সক্রিয় সমর্থন করায় সরকার সমর্থকরা গির্জাগুলোতে অগ্নিসংযোগ এবং যাজক ও ধর্মীয় নেতাদেরকে হত্যা করতে শুরু করে। ফ্যালাঞ্জিস্ট নামে পরিচিত জাতীয়তাবাদী বিদ্রোহীরাও শুরু করে নির্বিচারে গণহত্যা।
উভয় পক্ষের কাছ থেকে সাহায্যের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন দেশ এতে সাড়া দেয় ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে। জার্মানি ও ইতালি ফ্রাঙ্কোকে সমর্থন করে এবং ইতিমধ্যেই আবিষ্কৃত নিজেদের অস্ত্র ও সেনাবাহিনীর সামর্থ্য পরীক্ষা করে দেখার জন্য এগুলোকে কাজে লাগানোর অজুহাত খুঁজতে থাকে। প্রজাতন্ত্রী তথা সরকারের সহায়তায় এগিয়ে আসে
৫০টি দেশের একটি আন্তর্জাতিক ব্রিগেড। কিন্তু জার্মানি ও ইতালির অস্ত্র ও অর্থপুষ্ট বিদ্রোহীরা প্রচণ্ড সংঘর্ষের পর ১৯৩৯ সালের মার্চে মাদ্রিদ দখল করে নেয়। এ গৃহযুদ্ধে প্রাণ হারায় ৬ লাখ মানুষ। এই গৃহযুদ্ধকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাথমিক মহড়া হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে।