
শত শত বছর ধরে আয়ারল্যান্ডের জনগণ বৃটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। এমনকি ১৮০১ সনের ইউনিয়ন এ্যাক্ট চালুর পরও আন্দোলনকারীরা স্বশাসনের দাবি তোলে। আন্দোলনের মুখে লর্ডস সভার প্রবল বিরোধিতা সত্ত্বেও ১৯১৪ সালে পাস হয় আয়ারল্যান্ডের স্বশাসন আইন। কিন্তু এ সময় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলতে থাকায় আইনটি স্থগিত ঘোষণা করা হয়। আয়ারল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলের প্রােটেস্ট্যান্টরা স্বশাসনের বিরোধিতা করে। তাদের আশঙ্কা ছিল, এ আইনের বাস্তবায়ন হলে রোমান ক্যাথলিকদের আয়ারল্যান্ডে তারা সংখ্যালঘুতে পরিণত হবে।
রোমান ক্যাথলিক নেতৃত্বের একটা অংশ স্ব-শাসনের জন্য যুদ্ধ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে রাজি ছিল না। তারা পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি উত্থাপন করে। আইরিশ রিপাবলিকান ব্রাদারহুড’ নামে পরিচিত একটি গ্রুপ ১৯১৬ সালের বড়দিনের উৎসবের সময় বিদ্রোহ শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়। স্বাধীনতা সংগ্রামে জার্মানির সাহায্য ও সহযোগিতা পাওয়ার আশায় এ সময় জনপ্রিয় আইরিশ নেতা স্যার রজার কেসমেন্ট গোপনে জার্মানি সফর করেন। একই বছরের ২১ এপ্রিল গুড ফ্রাইডেতে একটি জার্মান সাবমেরিনে করে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং দেশের মাটিতে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই গ্রেফতার হন। কিছু আইরিশ নেতা সশস্ত্র বিদ্রোহ বন্ধ রাখতে যথাসাধ্য চেষ্টা করেন। তা সত্ত্বেও ইস্টার মানডেতে বিদ্রোহ শুরু হয়ে যায়। এদিন সশস্ত্র স্বেচ্ছাসেবকবাহিনী ডাবলিনের জেনারেল পোস্ট অফিস অবরোধ করে। টানা আটদিন সংঘর্ষের পর ব্রিটিশ সরকার বিদ্রোহ দমন করতে সক্ষম হয়। কেসমেন্টসহ বিদ্রোহে নেতৃত্বদানকারী ১৬ আইরিশ নেতাকে দেয়া হয় প্রাণদণ্ড।