
১৮৬১ থেকে ১৮৬৫ সাল পর্যন্ত সংঘটিত উত্তর ও দক্ষিণের গৃহযুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রকে বিধ্বস্ত করে দেয়। দক্ষিণ নির্ভরশীল ছিল তুলা চাষ এবং কালো ক্রীতদাসদের চাষ করা কৃষি খামারের ওপর। অন্যদিকে উত্তর নির্ভরশীল ছিল ক্রীতদাসহীন কলকারখানার ওপর। নতুন গড়ে ওঠা অঙ্গরাজ্যগুলোতে দাসপ্রথা সম্প্রসারণ করা হবে কি হবে নাÑএই নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ বেধেছিল।
দাসপ্রথা সীমিতকরণের পক্ষপাতী রিপাবলিকান দলের সদস্য আব্রাহাম লিংকন ১৮৬০ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। দাসপ্রথামুক্ত অঙ্গরাজ্যগুলো সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছেÑএই ভয়ে দক্ষিণের ১১টি রাজ্য কনফেডারেট স্টেটস অব আমেরিকা নামে একটি পৃথক দেশ গড়ে তোলে। অঙ্গরাজ্যগুলো হচ্ছে : আলাবামা, আরকানসাস, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, লুইজিয়ানা, মিসিসিপি, উত্তর এবং দক্ষিণ ক্যারোলাইনা, টেনেসি, টেক্সাস ও ভার্জিনিয়া। লিঙ্কন এই পৃথকীকরণ অনুমোদনে অস্বীকার করেন এবং ১৮৬১ সালের এপ্রিল মাসে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়।
‘দক্ষিণ’-এর জেনারেল রবার্ট ই লি ১৮৬১ সালের জুলাই মাসে বুল রানে সংঘটিত প্রথম যুদ্ধে জয়লাভ করেন। কিন্তু অবশেষে জনবলের দিক দিয়ে শক্তিশালী উত্তর’ যুদ্ধে সমুচিত জবাব দিতে শুরু করে। ১৮৬৩ সালে গেটিসবার্গে ইউনিয়নের জয়লাভে যুদ্ধের মোড় পাল্টে যায়। ইউনিয়নের নৌবাহিনী দক্ষিণের বন্দরগুলো অবরোধ করে রাখে; জেনারেল ইউলিসিস এস গ্রান্ট ভিক্সবার্গ দখল করে নেন, এতে দক্ষিণের কনফেডারেশন বিভক্ত হয়ে পড়ে; জেনারেল শেরম্যান আটলান্টাকে জ্বালিয়ে দিয়ে জর্জিয়া এবং ক্যারোলাইনা অতিক্রম করেন।
অবশেষে ১৮৬৫ সালের এপ্রিল মাসে জেনারেল লি আত্মসমর্পণ করেন। এই যুদ্ধে ৬ লাখ ১৮ হাজার লোক মারা যায়। ১৮৬৩ সালে প্রেসিডেন্ট লিংকন বিদ্রোহী অঙ্গরাজ্যগুলোর ক্রীতদাসদের মুক্ত ঘোষণা করেন। যুদ্ধের পর দক্ষিণের ধ্বংসপ্রাপ্ত অর্থনীতিকে দাসদের সাহায্য ছাড়াই পুনর্গঠনের চেষ্টা সত্ত্বেও উত্তর এবং দক্ষিণের মধ্যে তিক্ততা থেকেই যায়।