
১৭৫৬ সাল থেকে ১৭৬৩ সাল পর্যন্ত ৭ বছরব্যাপী যুদ্ধ ছিল মূলত ইউরোপের দুটি জোটের শক্তির দ্বন্দ্ব। এর একপক্ষে ছিল অস্ট্রিয়া, ফ্রান্স, রাশিয়া ও সুইডেন। অন্যদিকে ছিল ব্রিটেন, হ্যানোভার ও প্রশিয়া। ভূখ- নিয়ে ফ্রান্স ও ব্রিটেনের মধ্যে ভারত এবং উত্তর আমেরিকাতেও যুদ্ধ হয়েছে।
প্রুশিয়ার সম্রাট ফ্রেডারিক স্যাক্সনি ও বোহেমিয়া আক্রমণ করলে এবং অস্ট্রিয়া ও তার মিত্ররা পাল্টা প্রুশিয়ায় অভিযান চালালে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ বেধে যায়। একপর্যায়ে ফ্রেডারিক খুবই শক্তিহীন হয়ে পড়েন। কিন্তু ১৭৫৭ সালে রসবাখ এবং লুথেনের যুদ্ধে অসাধারণ বিজয় তাকে নিশ্চিত ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে। এ সময় ব্রিটেন ও হনোভার অবশ্য তার সহায়তায় এগিয়ে আসে। ১৭৬২ সালে রাশিয়ার ক্ষমতায় বসেন তৃতীয় পিটার। ক্ষমতায় বসেই তিনি প্রুশিয়ার সঙ্গে শান্তিচুক্তি করেন। পরের বছর তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে অস্ট্রিয়া।
উত্তর আমেরিকায়ও এ সময় চলে শক্তির মহড়া। ১৭৫৯ সালে কুইবেকের যুদ্ধে বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে ব্রিটেন কানাডার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। অন্যদিকে ভারতেও বাড়তে থাকে ব্রিটিশ আধিপত্য। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সৈন্যরা সেখানে পরপর কয়েকটি যুদ্ধে বিজয় অর্জন করে ভারতে ব্রিটিশ আধিপত্য নিশ্চিত করে। এ সময় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সৈন্যদের নেতৃত্ব দেন কোম্পানির কেরানি রবার্ট ক্লাইভ।
১৭৬৩ সালে প্যারিসে একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ব্রিটেন, ফ্রান্স ও তার মিত্র স্পেনের মধ্যে। চুক্তি অনুযায়ী ব্রিটেন লাভ করে কানাডা, মিসিসিপি নদীর পূর্বতীরস্থ ফরাসি মালিকানাধীন ভূখ- ফ্লোরিডা। স্পেন পায় লুইজিয়ানা, মিসিসিপি নদীর পশ্চিম তীরস্থ ফরাসি নিয়ন্ত্রিত ভূখ- এবং ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপ মিনর্কা। ভারতে ফান্স তার নিয়ন্ত্রিত বেশির ভাগ ভূখ- অর্পণ করে ব্রিটেনকে। একই বছর প্রুশিয়া ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে স্বাক্ষরিত হিউবার্টসবার্গ চুক্তি অনুযায়ী সাইলেশিয়ার ওপর প্রুশিয়ার নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত হয়ে যায়।