
প্রথম পিটার (১৬৭২-১৭২৫) ইতিহাসে পিটার দ্য গ্রেট হিসাবে সমধিক পরিচিত। ১৬৬২ সালে দুর্বল চিত্তের বৈমাত্রেয় ভাই পঞ্চম আইভানের সঙ্গে যৌথভাবে তাঁকে রাশিয়ার জার মনোনীত করা হয়। আইভানের প্রতিনিধি হিসাবে তার বোন রাজকার্য পরিচালনা করতেন এবং সে সময় রাজদরবার থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখেন পিটার। ১৬৮৯ সালে পিটার এককভাবে ক্ষমতা দখল করেন। সোফিয়াকে তিনি খ্রিস্টানদের একটি মঠে নির্বাসিত করেন এবং আইভানকে নির্জনস্থানে বন্দি করে রাখেন। ১৬৯৬ সালে আইভান বন্দি অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। যুদ্ধে উৎসাহী পিটার কয়েকটি সফল যুদ্ধের নেতৃত্ব দেন। ১৬৯৬ সালে তিনি তুরস্কের কাছ থেকে কৃষ্ণ সাগরের বন্দর আজভ দখল করে নেন। গ্রেট নর্দার্ন ওয়ার’ বা উত্তরের মহাসমরে (১৭০০-১৭২১) তিনি বিশাল ভূখ- দখল করেন, যা রাশিয়াকে বাল্টিক সাগরে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়।
পিটারের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব হচ্ছে রাশিয়ার আধুনিকায়ন। তিনি ১৬৯৬ সাল থেকে ১৬৯৭ সাল পশ্চিম ইউরোপের বিভিন্ন দেশ সফর করে সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রা পর্যবেক্ষণ করেন। দেশে ফিরে তিনি বেশ কিছু সংস্কার কাজে হাত দেন। শুরু হয় তাঁর রাজদরবারে পাশ্চাত্য রীতিনীতির অনুসরণ। পশ্চিমা স্টাইলের পোশাক ব্যবহার করার জন্য তিনি রুশদের প্রতি নির্দেশও জারি করেন। পিটার সেনাবাহিনী পুনর্গঠন করেন এবং প্রতিষ্ঠা করেন নৌবাহিনী। তিনি শিল্প, ব্যবসাবাণিজ্য ও সিভিল সার্ভিসের প্রভূত উন্নয়ন ঘটান। সাম্রাজ্যজুড়ে তিনি তৈরি করেন অসংখ্য সড়ক, খনন করেন বহু খাল।