ভারত সরকার আতপ চাল রপ্তানির ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপ করায় হিলি বন্দর দিয়ে এই চাল আমদানি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। বিপরীতে বাংলাদেশ চাল আমদানিতে শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ নির্ধারণের পর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে সেদ্ধ চাল আমদানি অব্যাহত আছে। ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন, আতপ আমদানি বন্ধ থাকার সুযোগে হিলির স্থানীয় খুচরো বাজারে সেদ্ধ চালের কেজিতে ৪ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হিলিবন্দরের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী স্বপন কুমার বসাক ও খুচরা চাল বিক্রেতা মামুন হোসেন।
আমদানিকারকরা জানান, গত শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) থেকে আতপ চাল বিক্রির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে ভারত সরকার। তবে, সেদ্ধ চালের ওপর কোনো শুল্ক আরোপ করেনি। এর ফলে বিনা শুল্কেই বাংলাদেশে আসছে সেদ্ধ চাল।
রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) সম্পা কাটারি চাল প্রতিকেজি ৬৮ টাকা দরে বিক্রি হলেও (১৪ সেপ্টেম্বর) বিক্রি হয় ৭০ টাকা কেজি দরে।
আমদানিকারক রবিউল ইসলাম বলেন, ভারতীয় ব্যবসায়ীদের আতপ চাল রপ্তানিতে নিরুৎসাহিত করতে দেশটির সরকার ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। গত শনিবার থেকেই তা কার্যকর করা হয়। এর প্রভাব পড়েছে সেদ্ধ চালের ওপর।’
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক হোসেন বলেন, ভারত সরকার নতুন করে আতপ চালের ওপর শুল্ক আরোপের কারণে আতপ চাল আমদানি বন্ধ রেখেছেন হিলি বন্দরের আমদানিকারকেরা।
বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) খুচরা চাল বিক্রেতারা মামুন হোসেন বলেন,চিকন জাতের চালের দাম কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা বেড়েছে। এছাড়া, সরকার বাজারে ওএমএস, খাদ্যবান্ধব ও ভিজিডি কর্মসূচি চালু করায় মোটা জাতের চালের বেচা-কেনা কমে গেছে। বর্তমানে মোটা জাতের স্বর্ণা-৫ চাল ৫২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ বলেন, দেশের বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে চালের ওপর আমদানি শুল্ক ৬২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করে সরকার। এরপর থেকে আমদানিকারকেরা চাল আমদানি শুরু করেন। কিন্তু লোকসানের আশঙ্কায় বন্দর থেকে চাল খালাস বন্ধ রাখেন। এতে ১৫ থেকে ২০ দিন ধরে হিলি বন্দরে ১২ হাজার ২৪০ মেট্রিক টন চালসহ ৩০৬টি ভারতীয় ট্রাক খালাসের অপেক্ষায় আটকে থাকে। গেলো ২৮ আগস্ট (রোববার) সরকার চাল আমদানিতে শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করার পর ৩০ আগস্ট (মঙ্গলবার) হিলি বন্দর থেকে চাল খালাস শুরু করেন আমদানিকারকেরা।
পানামা হিলি পোর্ট লিংক লিমিটেডের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, এপর্যন্ত বন্দর দিয়ে ৭০৪ ভারতীয় ট্রাকে ২৮ হাজার ১৮০ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। ভারত সরকার আতপ চাল রপ্তানিতে শুল্ক আরোপ করায় কয়েকদিন ধরে এই বন্দর দিয়ে আতপ চাল আমদানি হচ্ছে না।