ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর সরকারী খন্দকার মোশারেফ হোসেন কলেজের সেই আলোচিত অধ্যক্ষ অনুতোষ কুমারসহ একজন সহকারী অধ্যাপকের বিরুদ্ধে কলেজে বহিরাগত মাদকসেবীদের দ্বারা চুরি, লুটপাটের কাজে সহযোগীতা করাসহ এ লুটপাটের প্রতিবাদ করায় পরিকল্পিত ভাবে মারধোর করার অভিযোগ এনে স্থানীয় থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগটি করেছেন ওই কলেজের সাবেক ছাত্রলীগের কলেজ শাখার সহ সভাপতি মারুফ আহমেদ। এ ঘটনায় কলেজের ছাত্রসমাজসহ শহরে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
এর আগে আলোচিত অধ্যক্ষ অনুতোষ কুমারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অন্যান্য শিক্ষকদের এসিআর (বার্ষিক গোপনীয় রিপোর্ট) রিপোর্টে কম নম্বর দেয়া ও বদলি করার সুপারিশের ভয় দেখিয়ে কলেজের সকল ক্ষমতা কুক্ষিগত করা, মাল্টিমিডিয়া ক্লাস উঠিয়ে দেয়া, এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার তিন মাস আগে বিদায় সংবর্ধনা দেয়া, অ্যাসেম্বলি পিয়নদ্বারা পরিচালনাকরা, কলেজের কম্পিউটার ল্যাব বন্ধ রাখাসহ নানা অনিয়মের তথ্য চিত্র নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছিলো।
থানায় অভিযোগকারী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স ৪র্থ বর্ষের ছাত্র মারুফ আহমেদ তার লিখিত অভিযোগে বলেন- বিবাদী মোঃ গোলাম মোস্তফা সহকারী অধ্যাপক ইসলাম শিক্ষা বিভাগ ও অধ্যক্ষ অনুতোষ কুমারের পৃষ্ঠপোষকতায় কলেজ ক্যাম্পাসে কিছু সংখ্যক বহিরাগতরা মাদক সেবন করে। এই বহিরাগতরা কলেজের মূল্যবান জিনিষপত্র লুটপাট ও চুরি করে আসছে। যার বিক্রিকৃত একটি অংশ বিবাদীদ্বয় পেয়ে থাকেন। এর ধারাবাহিকতায় ওই সকল মাদক সেবীরা গত ১৮ আগস্ট দুপুর দেড়টার সময় সাইকেল স্টোরের গ্রীল ভেঙ্গে ভিতরে রাখা ঢেউটিন ভ্যান যোগে নিয়ে যায়। বিষয়টি কলেজ ছাত্র প্রতিনিধিরা জানতে পেরে কলেজ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ চুরি যাওয়া ঢেউটিন ও চোরের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে গোপন রাখার চেষ্টা করেন। বিষয়টি নিয়ে কলেজ ছাত্র প্রতিনিধিরা প্রতিবাদ করে। মারুফ আহম্মেদ অভিযোগ করেন, প্রতিবাদের কারণে অধ্যক্ষ অনুতোষ কুমার পরিকল্পিত ভাবে ২৪ আগস্ট দুপুর আড়াইটার সময় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ছাত্র প্রতিনিধি নয়ন, মারুফ ও মানিককে তার রুমে আসতে বলেন। ওই তিন ছাত্র অধ্যক্ষের রুমে গেলে অধ্যক্ষ অনুতোষ কুমার বলেন, চুরি হওয়ার বিষয়টি একান্তই কলেজ কতৃপক্ষের, তোমরা এ বিষয়ে কথা বলার কে ! তখন চোরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ার কারণ জানতে চাইলে সহকারী অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা মারুফকে বেধড়ক মারপিট করেন বলে মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মঈন উদ্দীনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অধ্যক্ষসহ দুই জনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। দেখা যাক কি বেরিয়ে আসে।
মামলার বিষয়ে অধ্যক্ষ অনুতোষ কুমারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, চুরি যাওয়া ৭টি পুরানো ঢেউটিন উদ্ধার করে চুরির সাথে জড়িতদের কলেজ ক্যাম্পাসে না আসার নির্দেশ দিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়। আর মারুফ, নয়ন ও মানিক এখন আর কলেজের ছাত্র নন। তারপরও আমাদের এই বিচার তাদের পছন্দ না হলে একজন শিক্ষক সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করে মারুফ। ফলে এক শিক্ষক রেগে যেয়ে মারুফকে ধাক্কা দেয় এ ছাড়া কিছুই হয়নি। পরে মারুফ নামের ছেলেটি থানায় অভিযোগ দেয় বলে জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে স্থানীয় এমপি অ্যাড. শফিকুল আজম খান চঞ্চল বলেন একের পর এক অভিযোগ পাই ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আমি বিষয়টি দেখবো।