পাঁচদিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন পাঁচ সন্তানের জননী নছিমা বেগম (৩৫)। অনেক খোঁজাখুঁজি এবং থানায় সাধারণ ডায়েরি করেও তার কোন সন্ধান মিলছিল না। হঠাত আজ সকালে জঙ্গলের ভিতরে মাটিতে পুঁতে রাখা মরদেহ দেহ দেখে কাকের দল চিৎকার চেঁচামেচি করছিল। এই চেঁচামেচি আর শব্দে এলাকার মানুষের সন্দেহ জাগে সেখানে কি হয়েছে। আর সেই থেকে এই লাশের সন্ধান ও খোঁজ পেলেন স্বজনেরা। বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) সকালে এ ঘটনার খবর পাওয়া যায় শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার বিশগিরিপাড়া গ্রামে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, গত ২০ আগস্ট শনিবার সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন কাকরকান্দি ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ ও পূর্ব মানিককুড়া গ্রামের বাসিন্দা আমির আলীর স্ত্রী পাঁচ সন্তানের জননী নাছিমা বেগম। রাতে বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন স্বজনদের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করেন। একপর্যায়ে নালিতাবাড়ী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার স্বামী আমির আলী।
এদিকে নাছিমাকে সম্ভাব্য নানা জায়গায় খুঁজে ব্যর্থ হয়ে বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে বিশগিরিপাড়া বন বিভাগের সমতল বনে-জঙ্গলে সন্ধানে নামেন স্বজনেরা। এ সময় জঙ্গলের উপরে কাকেদের ডাকাডাকি চেঁচামেচি শোনে এগিয়ে আসেন নাছিমার মা গুলেরা বেগম। ঝোপের মাঝে মাটি ফুঁড়ে বেড়িয়ে থাকা মেয়ের অর্ধগলিত ও শেয়ালে কামড়ানো হাত-পা দেখে আঁতকে উঠেন তিনি। তার ডাক-চিৎকারে ছুটে আসেন অন্যরাও। খবর পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার আফরোজা নাজনীনসহ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যান। পুঁতে রাখা মরদেহ উদ্ধারে সিআইডি, সিআইডি’র ক্রাইম সিন ইউনিট, র্যাব ও পিবিআই সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়েছেন।
নাছিমার পিতা নাদির আলী জানান, আমির আলীর প্রথম এবং দ্বিতীয় স্ত্রী একটি করে সন্তান রেখে মারা গেছেন। তৃতীয় স্ত্রী এক সন্তান নিয়ে ঢাকায় থাকেন। তার মেয়ে নাছিমা আমির আলীর চতূর্থ স্ত্রী এবং এ ঘরে পাঁচ সন্তানের জন্ম হয়েছে। এরমধ্যে বেঁচে আছে চার সন্তান। ধারণা করা হচ্ছে, বনের আশপাশে থাকা কোন অপরাধী চক্র নাছিমাকে হত্যা করে মাটিতে পুঁতে রেখেছে।
রামচন্দ্রকুড়া ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম খোকা জানান, এ বনের ভিতরে একাধিক জায়গায় জুয়া এবং গাঁজার আসর বসে। ফলে এখানে অপরাধীদের আনাগোনা রয়েছে।
নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদুল হক জানান, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধারে থানা পুলিশ, পিবিআই, সিআইডি ও র্যাবের টিম ঘটনাস্থলে আছে। হত্যাকান্ডের কারণ ও অপরাধী সনাক্তে কাজ করা হচ্ছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে।