চিরিরবন্দরে রানীরবন্দর হতে চিরিরবন্দর প্রায় ১৫ কিমি রাস্তাটি ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রসস্থ ও সংস্কারের পর উদ্বোধনের আগেই কয়েকটি স্থানে দেবে গিয়ে ফেটে রাস্তার কার্পেটিং উঠে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে চলাচলকারি জনগণ। কর্তৃপক্ষের এ ধরনের নিম্নমানের কাজে চলাচলকারী জনসাধারণ ও যাত্রী সাধারণ ক্ষুদ্ধ হয়ে বিরুপ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করছে।
সংশ্লিষ্ট অফিস সুত্রে জানা গেছে, রাস্তাটি সংস্কার ও প্রশস্থ করতে ৪ কোটি ৮৬ হাজার ৬ শত ৫ টাকা দরে টেন্ডার হলে কুড়িগ্রাম জেলার আর কে রোডের মেসার্স বসুন্ধরা ট্রেডার্স ৩ কোটি ৯৯ লক্ষ ৪৮ হাজার ৬ শত ৯ টাকার চুক্তিমুল্য দিয়ে গত ২৫ এপ্রিল/২০২১ সালে কাজটি শুরু করেন এবং গত ২৪ আগস্ট/২১ সালে কাজটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে অদ্যাবধি পর্যন্ত কাজটি শেষ করা সম্ভব হয়নি।
সরজমিনে চিরিরবন্দর হতে রানীরবন্দর রাস্তাটিতে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের চার কোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তার নির্মান কাজ চলছে। রাস্তাটি প্রসস্থ ও সংস্কার করা হচ্ছে। ঘুঘুরাতলী মোড় হতে আন্ধারমূহা পর্যন্ত স্থানে রাস্তাটির কাজ শেষ না হতেই বেশ কয়েকটি স্থানে দেবে গিয়ে ফেটে কয়েকদিন পূর্বে করানো কার্পেটিং উঠে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। হাত দিয়ে ঘষা দিতেই রাস্তার কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের উপ প্রকৌশলী মোঃ আবদুল হাকিম মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহন করে ম্যানেজ হয়ে দায়িত্ব অবহেলায় কারণে রাস্তাটি নিম্নমানের করে তৈরি করা হয়েছে। নিম্নমানের ইটের খোয়া, বিটুমিন ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও রাস্তাটিতে যখন কার্পেটিং করা হয় তখন ভালোভাবে পরিষ্কার না করেই কার্পেটিং করা হয়েছে। কার্পেটিং করার পরের দিন থেকেই রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং ফেটে যাওয়া শুরু হয়েছে। রাস্তাটিতে রোলার করার সময় ভালভাবে রোলার না করায় উঁচু ও নিচু হয়েছে। ভালোভাবে ফিনিসিং করা হয়নি।
ওই রাস্তায় চলাচলকারি মাহতাব উদ্দিন, আমিনুল ইসলামসহ কয়েকজন অটো চালক বলেন, আমরা প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবধি চিরিরবন্দর হতে রাণীরবন্দর পর্যন্ত অটো চালাই। সে সুবাদে সবসময় রাস্তার কাজগুলো দেখতাম। এত নিম্নমানের কাজ করছে যে বলার ভাষা নেই। রাস্তার নিম্নমানের কাজ দেখে আমরা স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদেরসহ বিষয়টি কতৃপক্ষকে জানালেও কেউ কর্ণপাত করে নাই।
সিরাজুল ইসলাম, আবদুর নুরসহ কয়েকজন ভ্যানচালক বলেন, রাস্তাটিতে পিচ ঢালাই দেয়ার সময় রাস্তা পরিস্কার না করেই ঢালাই দিয়েছে। যার ফলে পরেরদিন থেকেই ফাটল শুরু হয়েছে। এখন ভোগান্তি হচ্ছে। নতুন রাস্তা ফেটে যাওয়া ও রাস্তার কাজ পুরো শেষ না হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছি। ভ্যানের বল বেয়ারিং ও টায়ার টিকতেছে না, দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে চিরিবন্দর উপজেলা প্রকৗশলী মুহাম্মদ ফারুক হাসান বলেন, রাস্তাটির কাজ এখনও শেষ হয়নি। ঘন বৃষ্টির সময় পিচ দেয়াতে কয়েকটি স্থানে পিচ ফেটে ও রাস্তা দেবে গেছে। এছাড়াও ড্রাম ট্রাক ওভারলোড নিয়ে চলাচল করাতে পিচ নষ্ট হয়ে গেছে। ঠিকাদারের জামানত আছে। তারা রাস্তাটির ওই অংশগুলি ঠিক করার কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। কার্পেটিং ফেটে যাওয়া স্থানগুলি ইতোমধ্যে ভাল করার জন্য পিচ উঠিয়ে ফেলা হয়েছে। অল্প দিনের মধ্যেই কাজ শেষ করা হবে।