দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বসছে কুরবানীর পশুর হাট। হাটগুলোতে হাটভর্তি গরু উঠলেও, গরুর দাম বেশি ও ক্রেতা কম থাকায় আশানুরূপ কেনাবেচা না হওয়ায় পড়েছেন গরু খামার মালিক ও মৌসুমী গরু বিক্রেতারা।
বিক্রেতারা বলছেন, বর্তমানে গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদেরকে বেশিদামে গরুর বিক্রি করতে হচ্ছে। কিন্তু হাটের ক্রেতা কম থাকায় আশানুরূপ কেনা-বেচা হচ্ছে না। এতে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন তারা। অপরদিকে ক্রেতারা তাদের সাধ্যের মধ্যেই কম দামে পছন্দের গরু খুজছেন।
গত মঙ্গলবার (৫ জুলাই) বিকেলে পৌর শহরের সরকারি কলেজ শহীদ মাঠে পৌরসভা পরিচালিত ঈদের পশু হাটে গিয়ে দেখা যায়, দেশি গরুর সমারহে ভরে উঠেছে কুরবানীর পশু হাট। কিন্তু তুলনামূলক ক্রেতা কম থাকায় আশানুরূপ কেনা-বেচা হচ্ছে না।
গরু বিক্রি করতে আসা আফছার আলী, করিম মন্ডলসহ কয়েকজন খামারী বলেন, বর্তমানে গোখাদ্যর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের পশু পালনে ব্যাপকহারে খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে, এ কারণে তাদেরকে বেশি দামে গরু বিক্রি করতে হচ্ছে। আবার সময় মতো গরু বিক্রি করতে না পারলে তাদেরকে (খামারীদের) বাড়ীতে বসিয়ে বসিয়ে খাওয়ানোর কারণে লোকশান গুণতে হচ্ছে।
গরুর ফড়িয়া ব্যবসায়ী সাহাবুর আলম বলেন, গত বছরের তুলনায় এবছর গরুর দাম দেড় থেকে দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই কারণে গরুর কেনা-বেচা গত বছরের তুলনায় অনেক কমে গেছে। তবে বড় গরুর তুলনায় মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা রয়েছে।
কুরবানীর গরু কিনতে আসা ক্রেতারা বলছেন, বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেশি, ঈদে অনেক খরচ, এখন বাংলা আষাঢ় মাস আর কয়েকদিন পরেই শুরু হবে আমন ধান রোপণ। আমন রোপণের টাকা ঘরে রেখে, কৃষকদের গরু কিনতে হবে, এই কারণে কৃষকরা বড় দামী গরু কিনতে আগ্রহী হচ্ছেনা। এদিকে গরুর দাম অনেক বেশি যার ফলে অনেকে গরু না কিনে ফিরে যাচ্ছেন। এতে হাটে অনেক গরু অবিক্রিত রয়ে যাচ্ছে।
হাট ইজারাদার আবুল হাছান ও মানিক মন্ডল বলেন, হাটে কেনা-বেচা কম হওয়ায় রাজস্ব আয়ও কমে গেছে।
উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রবিউল ইসলাম বলেন, উপজেলায় দুই হাজার ৩২৫ টি গরুর খামার রয়েছে। এরমধ্যে ২৩টি খামার প্রাণি সম্পদ বিভাগের অধিন নিবন্ধিত। এসব খামারে ১৯ হাজার ৮২৩টি গরু কুরবানীর জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এই গরুগুলো উপজেলার চাহিদা পুরণ করার পাশাপাশি দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আসা গরু ব্যবসায়ীরা পশুরহাট থেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে সরকারিভাবে ফুলবাড়ী পৌরসভা ও আমডুঙ্গির হাটকে পশুর হাট হিসেবে ইজারা দেওয়া হলেও, আসন্ন পবিত্র ঈদ উল আযহা সামনে রেখে উপজেলার ৭টি স্থানে পশুরহাট বসছে। সেগুলোর সরকারি অনুমোদন নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে অনুমোদনহীন পশুর হাটগুলোকে নতুন করে ইজারার আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।