দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলায় বোরো ধানের ক্ষতি কারক পোকা দমনে কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে পরিবেশ বান্ধব জৈব বালাই দমন পার্চিং পদ্ধতি। দিন দিন এই জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে চাষীরা এই পদ্ধতির দিকে ঝুকে পড়েছে। একদিকে যেমন বিষ মুক্ত পদ্ধতি পোকা দমন হচ্ছে, অন্যদিকে রক্ষা পাচ্ছে পরিবেশ।
কাহারোল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে চলতি বোরো মৌসুমে ৫ হাজার ২’শ ৫২ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদে লক্ষ মাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। এবার উপজেলায় উচ্চ ফলনশীল ব্রি-ধান ৫৮, ২৯, ৭৪, ৮৯, ৯২, ৮২ ও ২৮ জাতের সহ জিরা সাইল, গোল্ডেন কাঠারি ধান আবাদ করা হয়েছে।
কৃষি বিভাগ বলছে, পার্চিং মানে জমিতে ডাল পালা পুতে দেওয়া। ফসলের জমিতে ডাল, কনচি, বাঁশের খুটি এগুলো পুতে পাখি বসার ব্যবস্থা করলে ক্ষতিকারক পোকা, বাচ্চা, ডিম খেয়ে পোকা দমন করে পাখি। মূলত ফিঙ্গে, বুলবলি শ্যামা, দোয়েল, সাত ভায়রা সহ অনেক পাখি পার্চিং এ বসে পোকা ধরে খায়। ফসলে পোকা দমনে এই পদ্ধতি বলতে গেলে ব্যয় বিহীন ও পরিবেশ বান্ধব। ফসলের ক্ষেতে ডেড পার্চিং ও লাইভ পার্চিং দু’টি করা যায়। মরা ডাল পালা পুতে দিলে তা হবে ডেড পার্চিং আর ধনচে অড়হরড় এসব জীবন্ত গাছ জমিতে নির্দিষ্ট দূরত্বে লাগিয়ে দেওয়া হলে লাইভ পার্চিং। প্রতি বিঘাতে অন্তত ৪/৫টি বাঁশের আগা, কনচি বা ডাল পালা পুততে হয়। ফসল রোপনের পর পরই পার্চিং স্থাপন করতে হয়।
কাহারোল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আলী রিয়াজ জানান, আমরা কৃষকদের জমিতে পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করার জন্য সহযোগিতা করে আসছি। রোববার দুপুরে উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা এ.এস.এম আবদুর রহিম নিজেই কৃষকের জমিতে গাছের ডাল পুতে দিচ্ছেন।
কাহারোল কৃষি কর্মকর্তা আবু জাফর মোঃ সাদেক বলেন, ক্ষতিকর পোকা বিশেষ করে মাঝরা পোকা ধানের ক্ষতিকর আর পাখিদের প্রিয় খাবার। এই মাঝরা পোকা তাই পার্চিং পদ্ধতি খুব কার্যকর। এ পদ্ধতি কাজে লাগালে কীটনাশকের ব্যবহার কমে যায়। উৎপাদন খরচ কমে যায়। এ বছর এখন পর্যন্ত ৭৫ থেকে ৮০ ভাগ জমি পার্চিং এর আওতায় এসেছে। কিছু দিনের মধ্যে সেটা শতভাগের কাছাকাছি যাবে বলে আশা ব্যক্ত করেন।