পীরগঞ্জে একই স্থানে ব্রীজ নির্মানে দুই দফতর ও দুই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রশি টানাটানি শুরু হয়েছে। গত সোমবার উপজেলার মিঠিপুর ইউনিয়নের হাসানপুর জুম্মাপাড়ায় ওই ব্রীজ নির্মান নিয়ে পিআইও এবং বিএডিসি’র উপসহকারী প্রকৌশলী ঘটনাস্থলে পরষ্পর বিরোধী অভিযোগ করেন। পিআইও অফিস জানায়,বিগত ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে উপজেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন অফিস (পিআইও) উপজেলার মিঠিপুর ইউনিয়নের হাসানপুর জুম্মাপাড়ার ডোমজানা খালের উপরে কলি ফকিরের ঘাটে প্রায় ৫৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দে একটি ব্রীজ নির্মানের দরপত্র আহ্বান করে। কিন্তু সংযোগ রাস্তা না থাকায় ওই বরাদ্দকৃত অর্থ ফেরত যায়। পরে পিআইও অফিস সংযোগ রাস্তাটি নির্মান করে পুনরায় ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ব্রীজটি নির্মানের জন্য দরপত্র আহ্বান করে। ওই অধিদপ্তর থেকে ‘গ্রামীন রাস্তায় ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য পর্যন্ত সেতু/কালভার্ট নির্মান প্রকল্পের’ আওতায় প্রায় ৬৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দে ব্রীজটির দরপত্র আহ্বান করলে গত ৯ ফেব্রুয়ারী ‘মোঃ নওরোজ হোসেন’ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। ২০ ফেব্রুয়ারী ওই প্রকল্পের পরিচালক আতিকুল ইসলাম ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ব্রীজ নির্মান কাজের উদ্বোধন করেন। এরপর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি সাইনবোর্ড টানিয়ে নির্মান কাজ শুরু করে। অপরদিকে বিএডিসিও (বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন-সেচ) একই স্থানে ৬২ লক্ষ টাকা বরাদ্দে ব্রীজ নির্মানের জন্য টেন্ডারের মাধ্যমে ‘মেসার্স পিয়াস কন্সট্রাকশন’ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্মান কাজের দায়িত্ব পায়। বিএডিসি’র ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটিও গত রোববার দিবাগত শেষ রাতের দিকে মাটি খনন যন্ত্র ‘স্ক্যাবাডার’ নিয়ে যায়। এ নিয়ে পিআইও অফিস এবং বিএডিসির মধ্যে শুরু হয় রশি টানাটানি। খাল পাড়ের বাসিন্দা বাবুল বাশার (৫৫), আবুল কাশেম (৬০), সাহারা খাতুন (৩৫) বলেন, পিআইও স্যার ৩/৪ বছর থাকি বিরিজ করার জন্য এটি ঘোরোচে। বিরিজের সাথে হামার ইটের ঘাঁটা (রাস্তা) হবি। হামরা বিরিজ চাই। হামরা পাতারোত থাকি গরু-বকরি, ধানসহ অন্যান্য ফসল আনা-নেয়া করব্যার পারমো। স্থানীয় আ.লীগের সভাপতি মোর্শেদ বলেন- পিআইও অফিস পাইলিং করে ব্রীজ করবে। পাইলিং টেকসই হয়। সেটিই করা হোক।
পিআইও মিজানুর রহমান বলেন, ২০১৬ সালে মিঠিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম ফারুক আহমেদ, ইউনিয়নটির আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় জনতার সাথে পরামর্শক্রমে উল্লিখিত স্থানে ব্রীজ নির্মানের প্রকল্প গ্রহন করা হয়। তিনি আরও বলেন, রোববার রাত ৩ টার দিকে ওই স্থানে বিএডিসি’র ঠিকাদার স্ক্যাবাডার আনে বলে আমি খবর পেয়ে সোমবার ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে বিএডিসির পক্ষ থেকে উপসহকারী প্রকৌশলীও যান। এখানে তো আমরাই ব্রীজ করবো। বিএডিসি’র উপসহকারী প্রকৌশলী রুবেল মিয়া বলেন, ওই স্থানে ব্রীজ নির্মানে আমাদের আহ্বানে টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স পিয়াস কন্সট্রাকশন’ কাজ পায়। তিনি আরও বলেন, স্থানীয়ভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তি না হলে আমরা সংসদ সদস্যের কাছে গিয়ে সমঝোতা করে নেব।