চাঞ্চল্যকর ছাত্র রিসানকে জবাই করে হত্যাকান্ডের ২৪ ঘন্টার মধ্যে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায় অভিযান চালিয়ে মূলহোতা 'স্বাধীন' সহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৩।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, উপজেলার রানীগঞ্জ এলাকার বিল্লাল উদ্দিনের ছেলে স্বাধীন উদ্দিন (১৯) এবং অপর দুজন ১৫ ও ১৪ বছর বয়সী দুই কিশোর।
সহকারী পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজীব জানান, জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী স্বাধীন উদ্দিন স্বীকার করেছেন যে, প্রায় দশ মাস আগে সে রিসানকে সুদের বিনিময়ে টাকা ধার দেয়। রিসান প্রথম তিন মাস সুদের টাকা পরিশোধ করলেও পরিবর্তীতে সুদের টাকাসহ মূল টাকা দিতে ব্যর্থ হয়। উক্ত টাকাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময় রিসানের সঙ্গে স্বাধীনের বিরোধ হয়।একপর্যায়ে এরই জের ধরে গত ২৭ জানুয়ারি স্বাধীন উদ্দিন তার দুই কিশোর বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে রিসানকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরদিন ২৮ জানুয়ারি রাত আনুমানিক দশটার দিকে আসামি স্বাধীন রিসানকে উপজেলার রাণীগঞ্জ বাজারে তার পানের দোকানে ডেকে নিয়ে আসে। এরপর রানিগঞ্জের কশিগাড়ী গ্রামের পাঁচ মাথা মোড়ের নিকট পরিত্যক্ত হোটেলে যেতে বলেন। রিসান উক্ত স্থানে পৌঁছলে, হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী স্বাধীন তার পানের দোকান বন্ধ করে আনুমানিক সোয়া দশটার দিকে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে আসামি স্বাধীন রিসানের নিকট পাওনা টাকা ফেরত চেয়ে না পেয়ে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে রাগান্বিত হয়ে ধারালো ছুরি দিয়ে রিসানের গলায় আঘাত করে। এসময় রিসান চিৎকার করে উঠলে স্বাধীনের এক কিশোর বন্ধু রিসানের মুখের ভেতর বালু দিয়ে চেপে ধরে এবং অপর কিশোর তার হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে তার পায়ের রগ কেটে দেয়। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করে পৌনে এগারোটার দিকে রিসানকে রেখে তারা পালিয়ে যায়।
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু হাসান কবির জানান, ৩১ জানুয়ারী রাতে র্যাব-১৩ আসামীদেরকে থানায় হস্তান্তর করেন।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১ টায় আসামি 'আল আমিন' এর দেখানো মতে, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় রাণীগঞ্জ গোহাটির দক্ষিন পার্শ্বে মোজ্জামেল হক এর পুকুর থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহার করা চাকুটিও উদ্ধার করা হয়েছে। দুপুরে আসামীদেরকে দিনাজপুর কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।