নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস থাকলে সুখে দুঃখে পরিণত হয় তা প্রমাণ করেছেন বাজিতপুর উপজেলা শিমুলতলা গ্রামের বিধবা নারী তানিয়া আক্তার। জীবং সংগ্রামে লড়াইয়ে তিনি বর্তমানে জয়ী। তিনি সমাজের বিধবা নারীদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। ২০০৩ সালে ঘটা করে তানিয়া আক্তারের বিয়ে হয় শেখ এনামুল হক কাউছারের সাথে। ২০০৭ সনে কাউসার সোনালী ভবিষ্যতের আসায় পাড়ি দেন মধ্যপাচ্যের দেশ সৌদি আরবে। প্রবাস থেকে র্যামিটেন্স পাঠাতো কাউসার আর এতে করেই তানিয়া আক্তার দুই সন্তান নিয়ে সুখে দিন কাটতে লাগলো। হঠাৎ করেই ঘটে বিপত্তি সৌদি আরবে থাকাকালীন সময়ে কাউসার হৃদ রোগে আক্রান্ত হোন। সৌদি আরবের হাসপাতালে চিকিৎসা চলে তার। চিকিৎসার জন্য দেশ থেকে উল্টো টাকা পাঠাতো হয়। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসা করার পর তানিয়া তার স্বামীকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনেন। দেশের নাম করা হাসপাতালে চিকিৎসা করান। ব্যয়বহুল চিকিৎসার খরচ মেঠাতে একসময় বাড়িতে জমানোা টাকায় হাত পড়ে জমানো সব টাকা শেষ হয়ে যায় পরে সহায় সম্পত্তি বিক্রি করে স্বামীর চিকিৎসা চালান তানিয়া। এইদিকে একমাত্র উপর্জনক্ষম স্বামী কাউসার যখন বিছানায় শয্যাশায়ী তখন তানিয়া দিশেহারা। চোখে অন্ধকার দেখছেন, এমন সময় জানতে পারেন বাজিতপুর মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কার্যালয়ে মেয়েদের কে আত্মনির্ভরশীল করার জন্য সেলাই-ব্লকবাটিকসহ বিভিন্ন প্রকার কর্ম হাতে কলমে শিখানো হয়। কোন প্রতান্তর না পেয়ে সেখানে তিনি ভর্তি হয়ে যান এবং কয়েক মাসের মাথায় তিনি সেলাই কাজ রপ্ত করেন। বাড়ি এসে সেলাই মেশিন কিনে কাজ শরু করে দেন। পাড়া পড়শি মেয়ে মহিলাদের জামা কাপড় তৈরি করার অর্ডার পান তিনি। এইভাবে এলাকায় পরিচিত হয়ে যান ভালো দর্জি হিসেবে। দিন দিন কাজের পরিমাণ বাড়তে থাকে। এদিকে তার স্বামী কাউসার কয়েক বছর রোগ শোকের পর গত মার্চ মাসে স্বামী সব মায়া ত্যাগ করে পরপাড়ে পাড়ি জমান, স্বামী যাবার পর সেলাই কাজের আয় দিয়ে তিনি ছেলে মেয়ে দুটি সন্তানের ভরণপোষন, পড়াশোনার খরচ এবং ভাগলপুরের চন্দ্রগ্রাম এলাকায় বাসাভাড়া চালিয়ে যান। বর্তমানে তিনি সেলাই কাজ করছেন পাশাপাশি গোটা কয়েক মুরগি পালন করে আর তার আয় দিয়ে সংসারের সচ্চলতা এনেছেন। একমাত্র ছেলে এবার এসএসসি পরীক্ষায় আফতাব উদ্দিন স্কুল এ- কলেজ থেকে জিপিএ- ৫ পেয়েছে। তানিয়া আক্তার বলেন স্বামী যখন হৃদরোগ সহ আমি অন্যন্যা রোগে আক্রান্ত তখন আমি দিশেহারা। অকুল পাথারে ভাসছিলাম এমনি সময় বাজিতপুর মহিলা বিষয়ক কার্যালয় থেকে সেলাই প্রশিক্ষণ শেষে সেলাই কাজ করে আমাকে ঘুরে দাড়াতে হয়েছে। আমার মতো বিধবা নারীরা যেন নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস নিয়ে নিজেরা বিভিন্ন প্রকার কাজ শিখে ঘুরে দাড়াতে পারে। বাজিতপুর উপজলো মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা দিলরুবা আক্তার বলেন, আমাদের কার্যালয় থেকে বেকার যুবতী নারীরা বিভিন্ন প্রশিক্ষণ শেষে ঘরে বসে নেই। কাজ শিখে তারা নিজেদের পায়ে দাঁড়িয়েছে।