যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি বলেছেন, দেশের সকল মুক্তিযোদ্ধাদেরকে আমি শ্রদ্ধা করি। কারণ, আমার বাবা আহসান উল্লাহ মাষ্টারও ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের জীবন বাজী রেখে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন। যেসব মা-বোন তাদের সম্ভ্রম হারিয়েছেন তাদের প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাই।
মঙ্গলবার বিকেলে গাজীপুরের বঙ্গতাজ অডিটরিয়াম হল রুমে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের সংবর্ধণা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণের সভাপতিত্বে অন্ষ্ঠুানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি শামসুন নাহার ভূঁইয়া, গাজীপুর জেলা প্রশাসক এস.এম তরিকুল ইসলাম, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান, সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মন্ডল, বীরমুক্তিযোদ্ধা আবদুস সাত্তার মিয়া। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম, গাজীপুর জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মো. খায়রুজ্জামান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুজ্জামান কিরন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা একটি স্বাধীন দেশ ও জাতীয় পতাকা পেয়েছি। মুক্তিযোদ্ধারা দেশের সূর্য সন্তান। পুরো গাজীপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের নামে সংশ্লিষ্ট এলাকার সড়ক ও স্থাপনার নামকরণ করা হবে। সিটি করপোরেশনের আগামী মিটিংয়ে এবিষয়টি প্রস্তাব আকারে তোলা হবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কটূক্তি করায় জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জাহাঙ্গীর আলম ভুয়া টেন্ডার, বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে ভুয়া বিল-ভাউচার দিয়ে, অবৈধভাবে এলাকার হাট-বাজার ইজারা দিয়ে টাকা আদায়, রাস্তা প্রশস্তকরণের নামে সাধারণ মানুষের ভূমি জবরদখল করে যেসব অপরাধ করেছে তা আপনাদের সামনে ভবিষ্যতে উপস্থাপন করা হবে।
মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও বীরমুক্তিযোদ্ধার খাবার ও পুরস্কার পায়নি : সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আসা মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্য ও বীরমুক্তিযোদ্ধারা খাবার-পানীয় ও পুরস্কার না পেয়ে উষ্মাপ্রকাশ করেছেন। তাদের অডিটরিয়ামের ভেতর ও বাইরে আয়োজকদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, প্রায় ৮০০ দাওয়াতি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধার জন্য প্রায় ১৫শ’ প্যাকেট খাবারের আয়োজনা করা হয়েছে। তারপরও অনেকেই তাদের দুপুরের খাবার পাননি। এমনকি তাদের পুরস্কার হিসেবে দেয়া কম্বলটুকুও পাননি।
এবিষয়ে মুন্সিপাড়ার বীরমুক্তিযোদ্ধা জলিল বলেন, আমাদেরকে বসিয়ে রেখে খাবার ও পানি কিছুই দেয়নি। টঙ্গীর আউচপাড়া থেকে সংবর্ধনায় অংশগ্রহণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা মজনু মোল্লা বলেন, সকালে এসে এখানে অবস্থান করছি। কিন্তু আমাদেরকে খাবার বা পুরস্কার কিছুই দেয়া হয়নি।
এব্যাপারে গাজীপুরের বিলাসপুর থেকে আসা মুক্তিযোদ্ধা মাহফুজুর রহমানের স্ত্রী ওয়াহিদা রহমান বলেন, সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত বসে রয়েছি। আমাদেরকে খাবারও দেয়নি। এমনকি পুরস্কারও দেয়নি।
এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে প্রকৌশলী লেহাজ উদ্দিন বলেন, তালিকাভূক্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের স্বজনদের নামে বরাদ্দকৃত পুরস্কার পৌঁছে দেয়া হবে। পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু বিতরণে ক্রুটির কারণে খাবার সংকট দেখা দিয়েছে।