মানুষের ভেতর এক বিশাল শক্তি লুকিয়ে আছে তার নাম ইচ্ছাশক্তি। যে শক্তি অফুরন্ত সম্ভাবনার দ্বার। ইচ্ছাশক্তিকে যদি সত্যিকারার্থে জাগ্রত করা যায় তাহলে সাত সমুদ্র তেরো নদী পাড়ি দিয়ে হলেও বিজয় ছিনিয়ে আনা সম্ভব। অদম্য ইচ্ছাশক্তি সাফল্যের অন্যতম সোপান। অদম্য, অজেয় ইচ্ছাশক্তি যার রয়েছে বিজয়ী হওয়ার শতভাগ সম্ভাবনা তারই থাকে। তেমনি ইচ্ছে শক্তি সম্পন্ন একজন তরুণ উদ্যোক্তার কথা বলছি। আলামিন শেখ(৩০), পিতা শাহজাহান আলী শেখ, মাতা জাহারুল নেসা।
ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলেচানপুর ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের তরুণ এই যুবক তার পরিবারে পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট। বাবা ব্যবসায়ী হওয়ার সুবাদে স্কুল জীবন থেকেই অবসর সময়ে বাবার ব্যবসা দেখাশোনা করতেন আলামিন। আর তখন থেকেই মনের মধ্যে একটি স্বপ্ন বাসা বাঁধতে থাকে। বাবার মতো নিজেকে একজন সফল ব্যবসায়ি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।।শুরু করার মত ছিলনা কোন মূলধন। পরিবারের সদস্যরা চাইতেন লেখাপড়া শেষ করে আলামিন বড় চাকরি করবে। যে কারণে পরিবারের পক্ষ থেকে মেলেনি কোন সাড়া। তবুও থেমে যাননি আলামিন। একমাত্র মনের জোরে স্বপ্নবাজ এই যুবক ছাত্রজীবনের গচ্ছিত কিছু অর্থ দিয়ে ২০০৫ সালে পৈত্রিক জমিতেই শুরু করেন রাইস মিল দিয়ে। পর্যায়ক্রমে তিনি বাউন্ডারি নেট, চার কোনা খুটি ও গোল খুটি তৈরির কারখানাও করেন।আলামিন কারখানার কাঁচামাল ঢাকা পঞ্চগড় কুস্টিয়াসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করেন। সীমিত মূলধন দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে তার চলমান চারটি প্রজেক্ট এ ৫০ লক্ষ টাকার অধিক বিনিয়োগ করা রয়েছে বলে তিনি জানান। তারপ্রতিষ্ঠানে এলাকার ৪৫ জন শ্রমিক জীবিকা নির্বাহ করেন। কারখানায় উৎপাদিত বাউন্ডারি নেট, চার কোনা খুটি ও গোল খুটি স্থানীয় বাজারসহ আশেপাশের এলাকার ক্রেতাগণ কারখানায় এসেই কিনে নিয়ে যান। অনেক ক্রেতা আবার কারখানায় এসে ওয়াডার করে যান।ফলে বেচাবিক্রিও ভালো হয়।
এই কারখানার একজন শ্রমিক হলেন সাজ্জাদ হোসেন। বালিয়াডাঙ্গা গ্রামেই তার বাড়ি। এই কারখানায় কাজ করে চলে তার সংসার। তিনি বলেন, আলামিন চাকরির পেছনে না গিয়ে এলাকায় যে কারখানা তিনি স্থাপন করেছেন সেখানে কাজ করে আমি ও আমার মত অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করছে।
আলামিন শেখ জানান, বাবা ব্যবসায়ি হওয়ায় ছোটবেলা থেকে আমার মধ্যে ব্যবসায়ি মনোভাব তৈরি হয়। স্বপ্ন দেখতে শুরু করি বড় ব্যবসায়ি হওয়ার। ১৩ বছরের ব্যবসায়িক জীবনের শুরুটা ছিল আমার কাছে বেশ কঠিন। কেননা পরিবার থেকে কেউ চাইত না আমি ব্যবসায়ি হয়ে উঠি।তবুও আমি থেমে না গিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে থাকি। চলার পথে বিভিন্ন সময় নানা বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হতে হয় আমাকেবর্তমানে প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি মাসে প্রায় এক লাখ টাকার অধিক মাসে লাভ হয়ে থাকে। স্থানীয় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে আর্থিক সহযোগিতা পেলে আমার স্বপ্ন আছে আরো দুইটি কারখানা প্রতিষ্ঠান করার।