চট্্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় ৩য় দফায় আগামী ২৮ নভেম্বর অনুষ্টেয় নির্বাচনের প্রচারণা জমজমাট। নির্বাচনে ভোট ভিখারীরা জনমত তাদের পক্ষে নিতে ভোট ভিক্ষার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছে।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, হাটহাজারী উপজেলায় ১৪ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা রয়েছে। এই উপজেলায় নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লক্ষ ৫৬ হাজার ৯ শ ৯৩ জন,। পুরুষ ১ লক্ষ ৩১ হাজার ৯ শ ১৪ জন। মহিলা ১ লক্ষ ২৫ হাজার ৭৯ জন। তাছাড়া ২৮ নভেম্বর ইউপি নির্বাচনে ১৪ টি ইউনিয়নের মধ্যে ১ নং ফরহাদাবাদ ইউপিতে মামলা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে নির্বাচন স্থগিত রয়েছে। বাদবাকী ১৩ টি ইউপিতে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তারিখে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনে উপজেলার ৪ নং গুমানমর্দ্দন ইউপির আওয়ামী লীগ দলীয় বর্তমান চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান ও ৮ নং মেখলে ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন চৌধুরী নৌকা প্রতীকের একক প্রার্থী হওয়ায় এই দুই ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। এদিকে ২ নং ধলই, ৩ নং মির্জাপুর, ৫ নং নাঙ্গলমোড়া, ৬ নং ছিপাতলী, ৯ নং গড়দুয়ারা, ১০ নং উত্তর মাদার্শা, ১১ নং ফতেপুর, ১২ নং চিকনদন্ডী, ১৩ নং দক্ষিণ মাদার্শা, ১৪ নং শিকারপুর, ১৫ নং বুড়িশ্চরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ১১ জন। তাছাড়া বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলে ২৬ জন প্রার্থী রয়েছে। সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১ শ ৩ জন প্রার্থী হলেও উপজেলার গুমানমর্দ্দন ইউপিতে ২ জন, নাঙ্গলমোড়া ইউপিতে ১ জন, শিকারপুর ইউপিতে ২ জন একক প্রার্থী। সাধারণ সদস্য পদে ৫ শ ১৭ জনের মধ্যে উপজেলার গুমানমর্দ্দন ও নাঙ্গলমোড়া ইউপিতে ১ জন করে একক প্রার্থী।
তাছাড়া ১৩ টি ইউনিয়নের মধ্যে ১২ টি ইউপিতে মোট ১ শ ২১ টি ভোটকেন্দ্রে ৬ শ ৩৩ টি বুথে ভোটগ্রহন করা হবে। উপজেলার ১২ নং চিকনদন্ডী ইউনিয়নে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহন করা হবে। গত বুধবার ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহনকারী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোট গ্রহনে দায়িত্ব পালন করবেন ১ শ ২১ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৬ শ ৩৩ জন সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার এবং ১২ শ ৬৬ জন পোলিং অফিসার।
উপজেলার আওতাধীন বিভিন্ন ইউনিয়নে সরোজমিন পরিদর্শনকালে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রত্যেক ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে উৎসব মুখর নির্বাচনী পরিবেশ বিরাজ করছে। প্রচারণার নিদিষ্ট সময়ে প্রত্যেক পদের প্রার্থীরা নিজেদের কর্মী সমর্থকদের নিয়ে গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কোন কোন প্রার্থী উঠান বৈঠকে ভোটারদের সাথে মত বিনিময় করছেন। প্রত্যেক প্রার্থী মাইকিং করে প্রচারণা চালাচ্ছেন। পোস্টার ফেষ্টুন ব্যানারের পুরা এলাকা ছেয়ে গেছে। অনেক প্রার্থী আস্তাপ্রতীকের অনুকরণে প্রতীক প্রদর্শন করছেন ভোটারদের মনযোগ আর্কষণের জন্য।
বিভিন্ন এলাকায় প্রার্থীরা নিজ কেন্দ্র ছাড়া প্রত্যেক কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বলে গণমাধ্যম কর্মীদের জানিয়েছেন। তাছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকেরা এক অজানা আতংকের মধ্যে রয়েছে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য প্রার্থীদের আশ্বস্ত করছেন। কোন এলাকায় সুনিদিষ্ট অভিযোগ ফেলে তাৎক্ষণিক দায়িত্ব প্রাপ্ত ম্যাজিষ্ট্রেট ওই এলাকায় উপস্থিত হয়ে প্রার্থী ও কর্মী সমর্থকদের অভয় দিচ্ছেন। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যক ইউনিয়নে বিশেষ করে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আইন শৃঙ্খলা বিষয়ে প্রার্থীদের সাথে সভা করে মত বিনিময় করছেন। গত মঙ্গলবার উপজেলা প্রশাসন প্রত্যেক ইউপির সাধারণ ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের প্রার্থীদের নিয়ে মতবিনিময় করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সৈয়দ এসডি আনোয়ার খালেদ বলেন, আসন্ন ২৮ নভেম্বর অনুষ্টেয় ইউপি নির্বাচন অবাদ ,সুষ্ট ও শান্তিপূর্ণ ভাবে অনুষ্ঠানের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে যাবতীয় প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। এতে কোন আতঙ্ক বা শংঙ্খার কারণ নেই। প্রত্যেক ভোটার নিজ নিজ কেন্দ্রে অবাদে তাদের ভোটাধীকার নির্ভয়ে প্রয়োগ করতে পারবেন। কোন কেন্দ্রে অপ্রীতিকর ঘটনা দেখা গেলে তাৎক্ষণিক ভাবে নির্বাচন স্থগিত করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দায়িত্ব পালন করবেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাটহাজারী সার্কেল মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন জানান,নির্বাচনের ব্যাপারে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে। কোন খানে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে বা আশঙ্কা দেখা দিলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহিদুল আলম বলেন, অবাদ নির্বাচন করার জন্য প্রশাসনের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে। কোন এলাকায় নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘন হচ্ছে কি না তা পর্যাবেক্ষণ করা হচ্ছে। প্রার্থীদেও নিয়ে ইতোমধ্যে মতবিনিময় সভা করা হয়েছে যাতে নির্বাচন চলাকালীন সময় কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।