গ্রাহকের আস্থা তৈরির জন্য ই-কমার্সের কেনাকাটায় এখন পণ্য হাতে পেয়ে দাম পরিশোধের হার বেড়ে গেছে। যাকে ক্যাশ অন ডেলিভারি (সিওডি) বলা হয়। আগে যেখানে সিওডির পরিমাণ ছিল ৫০ শতাংশেরও কম, বর্তমানে তা প্রায় ৯০ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে। আর সিওডি বেড়ে যাওয়ায় উদ্যোক্তা ও মার্চেন্টরা খুশি। কারণ পণ্য বিক্রির অর্থ দ্রুত উদ্যোক্তাদের হাতে চলে আসছে। তবে শুধু নগদ বিক্রিতে ই-কমার্সের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। কারণ ক্রেতার ঘরে নগদ অর্থ বেশি না থাকায় কেনাকাটার পরিমাণ ও হার দিনে দিনে কমে যাবে। সেজন্য কার্ড ও বিভিন্ন মাধ্যম (এমএফএস সার্ভিস) দিয়ে কেনাকাটার পরিমাণ বাড়ানো প্রয়োজন। তা নাহলে ওই খাত দিনে দিনে দুর্বল থেকে দুর্বল হবে। ই-ক্যাব (ই-কমার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিশ্বের কোথাও ই-কমার্সে আগে অর্থ পরিশোধ করে পণ্যের পেছনে ঘুরার নিয়ম নেই। গ্রাহকের অর্থ আত্মসাত করতে তা শুধু বাংলাদেশেই চালু করা হয়েছিল। বর্তমানে ই-কমার্সে কেনাকাটায় অগ্রিম অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে ক্রেতাদের আস্থা কমে গেছে। ফলে ক্যাশ অন ডেলিভারি (সিওডি) বেড়েছে। সার্বিকভাবে সিওডি আগে ৭০ শতাংশের মতো ছিল। বর্তমানে তা ৯০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। ছোট বড় সব কোম্পানির ক্ষেত্রেই এমন হয়েছে। এটা একদিক দিয়ে ভাল। কারণ পেমেন্ট গেটওয়েতে টাকা আটকে থাকছে না। যদিও পেমেন্ট গেটওয়ে থেকে ই-কমার্সগুলোর টাকা পেতে ৭-১০ দিন লেগে যেত। বর্তমান প্রেক্ষাপটে ক্রেতা ও মার্চেন্ট দুপক্ষরই এ্যাডভান্স পেমেন্টের চেয়ে সিওডিতে আগ্রহী বেশি। ই-কমার্সের মূল ভিত্তিই হলো ক্যাশ অন ডেলিভারি। দেশে বর্তমানে ই-কমার্সের গ্রাহক দেড় কোটিরও বেশি। ই-কমার্স নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু ওসব উদ্যোগেও দেখা যাবে পেমেন্ট গেটওয়েগুলো ছোটখাটো ই-কমার্স কোম্পানিগুলোকে সেবাই দিতে চাইবে না। যদি সেবা দিতে চায়ও তাহলে পেমেন্ট দিতে দেরি হবে।
সূত্র জানায়, ই-কমার্সে কেনাকাটায় গ্রোসারির ক্ষেত্রে কোন সমস্যা নেই। সমস্যা হলো বড় কোন পণ্যের দাম ৫০ বা ৬০ হাজার টাকা। নগদে সেসবের দাম দেয়াও কঠিন। কারণ ক্রেতারা ঘরে এত টাকা রাখেন না। এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া সিওডি বেড়ে যাওয়ায় পণ্য ফেরতের সংখ্যাও বেড়েছে। সিওডি হওয়ায় ডেলিভারিম্যান ক্রেতাকে না পেয়ে ফিরে আসছে। পরে ডেলিভারি দিতে আবারও যাচ্ছে। তাতে পরিচালন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। আস্তে আস্তে ওসব সমস্যা বাড়ছে।