কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে এক প্রধান শিক্ষক ও নৈশ প্রহরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী ও অভিভাবকবৃন্দ। অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের ২ নং গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মিত ঘরের এঙ্গেলসহ টিনের চালটি ভেঙ্গে যাওয়ায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদানে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতো। ফলে কার্যকরী কমিটির মিটিং করে সরকারি অনুদান স্লিপের এবং দুটি গাছ বিক্রির টাকায় ১০ বান্ডিল টিনস ইউক্লিপ্টাস গাছ ও বাঁশসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি কিনে ৪২ হাত একটি ছাপড়া ঘর উত্তোলন করে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ব্যবস্থা করা হয়। পরে বিদ্যালয়ের ওই ঘরটি প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভেঙ্গে পড়লে ঘরের টিন, কাঠ, বাঁশ, লোহা এবং এর আগের ঘরের ২টি রুমের ৪টি জানালার গ্রিলসহ সকল মালামাল বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে সংরক্ষণ করা হয়। পরে করোনাকালীন সময়ে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় গেলো ২১ অক্টোবর বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনের একটি মিটিংএ বিদ্যালয়ের সভাপতি নওশাদ আলী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ছানোয়ার হোসেন প্রধানের নিকট বিদ্যালয়ের রুমে সংরক্ষণকৃত মালামালের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি রুম খুলে দেখেন সেখানে কোনো মালামাল নেই। পরে মালামালের বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাইলে তিনি আবোল তাবল কথা বলে পাশ কাটিয়ে যান। এদিকে ওই প্রধান শিক্ষক সংরক্ষিত সকল মালামাল চুরি করে বিক্রি করে আত্মসাৎ করেছেন বলেও অভিযোগ উল্লেখ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নওশাদ আলী, সদস্য হাফিজুর রহমানসহ একাধিক সদস্য বলেন, অনেক টাকার মালামাল আমরা বিদ্যালয়ের রুমে রেখেছি। কিন্তু সেগুলো এখন নেই। সকল মালামাল প্রধান শিক্ষক ও নৈশ প্রহরী যোগসাজোস করে বিক্রি করে আত্মসাৎ করেছেন। বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি ম্যানেজিং কমিটিসহ এলাকাবাসীর।
নৈশ প্রহরী মোশারফ হোসেন বলেন, এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ভালো বলতে পারবেন। তবে কিছু মালামাল একজন সিনিয়র ম্যাডামের বাগান বাড়িতে রাখা আছে। এদিকে সকল অভিযোগ, মিথ্যা বোনোয়ট ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করে ২নং গোপালপুর সরকারি প্রথামকি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ছানোয়ার হোসেন প্রধান বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য একটি চক্র উঠে পড়ে লেগেছে। আমার সম্মান ক্ষুন্ন করতে চাইছে। আমি চাই বিষয়টির সুষ্ট তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হোক।
এ ব্যাপারে কথা বলতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার অধিকারীর সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার লিপিকা রায় বলেন, অভিযোগ হাতে পেয়েছি। তদন্ত করে কয়েকদিনের মধ্যেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট রিপোর্ট জমা দেয়া হবে এবং রিপোর্ট অনুযায়ী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর আহমেদ মাছুম বলেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে অভিযোগ দিয়েছে। তবে ব্যাপারে অবগত আছি। প্রাথমিক শিক্ষা অফিস এটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।