ইউএস এইড এবং এফসিডিও এর অর্থায়নে এবং কাউন্টার পার্ট ইন্টারন্যাশনাল এর কারিগরি সহযোগীতায় ‘ঢাকাকলিং’ কনসোর্টিয়াম প্রকল্পের আওতায় পালিত হলো কমিউনিটি পরিচ্ছন্নতা অভিযান। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বালুরমাঠ হাজারীবাগ এলাকায় পরিচ্ছন্নতা অভিযান, প্রতীকী র্যালী, ক্যাম্পেইন, পোস্টারিং, হাতের ছাপে পরিচ্ছন্নতার অঙ্গীকার ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপিত হয়। বারসিকের উদ্যোগে এই কর্মসূচীতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)’র সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো: আবদুস সোবহান, বিশেষ অতিথি বারসিকের পরিচালক পাভেল পার্থ, বিশিষ্ট সমাজ সেবক হাজী মো: কালাম শেখ, উপস্থিত ছিলেন বারসিকের প্রজেক্ট ম্যানেজার ফেরদৌস আহমেদ, ঢাকা কলিং এর মনিটরিং ও ডকুমেন্টশন কর্মকর্তা ফারহা হাদিয়া প্রমূখ। আরও বক্তব্য রাখেন বস্তিবাসী নেতা হোসনে আরা বেগম রাফেজা, হারুণ অর রশিদ,নাজমা বেগম, আসমা আক্তার, ইব্রাহীম রানা, আমীর আলী, ইয়ুথ লিডার বৈশাখী প্রমূখ। আজ সকাল দশটায় বালুর মাঠের সামনে থেকে পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করেন র্যালীতে অংশগ্রহণকারী শতাধিক মানুষ। এ সময় তারা বালুর মাঠ থেকে শাহজাহান মার্কেট পর্যন্ত রাস্তার দুই ধারে পরিচ্ছন্নতার কাজে হাত লাগান এবং কমিউনিটির মানুষদের সঠিক জায়গায় বর্জ্য ফেলার জন্য আহবান জানান। ইয়ুথ লিডারটা এ সময় কমিউনিটিতে পরিচ্ছন্নতা বিভিন্ন শ্লোগান সম্বলিত পোষ্টার লাগিয়ে ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণ করেন। এ সময় স্থানীয় পরিচ্ছন্নতা কর্মিরাও সংহতি জানিয়ে পরিচ্ছন্নতা কাজে অংশগ্রহণ করেন।
সিবিও নেতা আমীর হোসেনের সভাপতিত্বে ও ইয়ুথ লিডার বৈশাখীর সঞ্চালনায় ব্লক কারখানায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রকৌশলী মো: আবদুস সোবহান বলেন, আমরা আজকের এই অভিযান পরিচালনা এজন্যই করলাম যাতে আমরা নিজেরা সচেতন হই এবং অন্যান্যের সচেতন করি। আমাদের শক্তি অনেক, ছোট ছোট উদ্যোগ নিয়ে আমরা একটা সুস্থ পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারি, আমরা আমাদের শহর ও দেশকে দুষণমুক্ত করতে পারি। তিনি আরও বলেন, কোন বর্জ্যই এখন আর বর্জ্য নয়, বর্জ্য হলো সম্পদ কিন্তু এই সম্পদ সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকতে হবে। তিনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সঠিকভাবে গড়ে তোলার উপরও গুরুত্ব আরোপ করেন।
পাভেল পার্থ বলেন, আমরা আজকে র্যালী করলাম আর সাদা কাপড়ে হাতের ছাপ দিয়ে সংহতি জানালাম একটি সুস্থ সুন্দর পরিবেশের জন্য। সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনাই পারে আমাদের আরো স্বাবলম্বী করতে। তিনি বলেন, বস্তির সকলকে আরও সচেতন হতে হবে পরিবেশের প্রশ্নে।
হোসনে আরা বেগম রাফেজা বলেন, আমরা সর্বদাই চেষ্টা করছি বস্তিবাসীদের সচেতন করতে। তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের আরও সক্রিয়ভাবে কমিউনিটির মানুষদের পাশে দাঁড়ানো দরকার।
আলোচনা সভা থেকে বক্তারা আরও বলেন, বস্তিবাসীরা নানা ধরনের সংকটের মধ্যে দিনাতিপাত করেন আর বর্জ্য সংক্রান্ত সমস্যা হলো তার মধ্যে অন্যতম। আমাদের একটি সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নীতি দরকার যেখানে সকলের জন্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনাটা সঠিক করা যায়। সকাল ১০ থেকে থেকে বেলা ১২.৩০ পর্যন্ত এই কর্মসূচীতে কয়েকশত মানুষ নানান ভাবে যুক্ত হয়ে কর্মসূচীকে উৎসাহ প্রদান করেন। এ সময় দোকানদার, হকার, বস্তিবাসী, তরুণ, যুব এই কর্মসূচীর সাথে সংহতি জানান ও পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। উল্লেখ্য ঢাকা কলিং প্রকল্পটি ডিএসকে, বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাসনলেজ (বারসিক), কোয়ালিশন ফর দ্যা আরবান পুওর (কাপ) এবং ইনসাইট্স এর মাধ্যমে জানুয়ারি ২০২১- ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত চলবে।